কসবার ভ্যাকসিন কেলেঙ্কারি নিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাচ্ছে পুলিশ। লালবাজারের গোয়েন্দা অফিসাররা আগেই বলেছিলেন, ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের ‘মাস্টারমাইন্ড’ দেবাঞ্জন দেবের প্রতারণার শিকড় অনেক দূর ছড়িয়ে আছে। তদন্ত তাই প্রতিদিনই নতুন মোড় নিচ্ছে। প্রতারকের ঘনিষ্ঠ মহলে খোঁজ চালিয়ে এবার তিন খাস সহযোগীর হদিশ পেল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত তিনজনের তিন সুশান্ত দাস (৫৪), রবিন সিকদার (৩১) ও শান্তনু মান্না (৪৪)। এই তিনজনই দেবাঞ্জনের ভুয়ো সংস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। এই তিনজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতেরা প্রত্যেকেই দেবাঞ্জনের সহযোগী।
ভুয়ো টিকাকরণ শিবিরের দেখাশোনা থেকে সই জাল করা, সব কাজেরই দায়িত্ব ছিল এই তিনজনের ওপর। নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন সংস্থার থেকে টাকা আদায় করা, সই নকল করা ইত্যাদি যাবতীয় অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে এই তিনজনই সরাসরি জড়িত। এদের মধ্যে শান্তনুর দায়িত্ব ছিল দেবাঞ্জনের ভুয়ো সংস্থার দেখাশোনা করা। বাকি দু’জন সই নকল করে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলত। কসবায় ভুয়ো টিকাকরণ শিবিরের ষড়যন্ত্রেও এই তিনজনই দেবাঞ্জনকে সাহায্য করেছিল।
ভ্যাকসিন কেলেঙ্কারির তদন্তে শুক্রবারই বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করেছে লালবাজার। তদন্তকারী অফিসাররা বলছেন, আরও বড় ষড়যন্ত্রের ছক ছিল দেবাঞ্জন দেবের। ধরা না পড়লে সে এমন আরও ভুয়ো টিকাকরণ শিবিরের ছাড়পত্র জোগাড় করে ফেলত বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে রাজ্য তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি-ও ভ্যাকসিন কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্ত শুরু করতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, রাজ্য প্রশাসনের তরফে সব জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, করোনা-সহ যে কোনও টিকাকরণ কর্মসূচির জন্যই আগাম অনুমতি নিতে হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর বা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কাজ থেকে অনুমতি নিয়ে টিকাকরণ করা যাবে। সংশ্লিষ্ট শিবিরে কাদের টিকা দেওয়া হল, কোন টিকা দেওয়া হয়েছে, কীভাবে নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল, খরচ বাবদ কত টাকা নেওয়া হয়েছে, এসব তথ্য বিশদে জানাতে হবে প্রশাসনকে।