সোমবার হঠাৎই সুদানের ক্ষমতা দখল করে সে দেশের সেনাবাহিনীর একাংশ। বন্দী করা হয় দেশের প্রধানমন্ত্রী সহ সরকারের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সকলকে । এরপরই দেশের সাধারণ মানুষ পথে নামে । সেনাবাহিনীর দখলদারি অস্বীকার করে তাঁরা সমস্বরে প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। এরপরই রণংদেহী মূর্তি ধারণ করে সেনাবাহিনী। রাজধানী খার্তুম সহ দেশের বিভিন্ন অংশে জনগণের উপর গুলি চালাতে শুরু করে তারা। এই ঘটনার জেরে এখনও পর্যন্ত ৭ জন প্রতিবাদী প্রাণ হারিয়েছেন। সে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ইতিমধ্যেই ১৪০ জন গুরুতর জখম হয়েছেন বলে ।

দীর্ঘদিন সুদানের শাসন ক্ষমতা কব্জায় রেখেছিলেন ওমর আল-বসির। বছর দুয়েক আগে তিনি ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন দেশের মানুষের প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ে । এরপর একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয় অর্থনীতিবীদ তথা রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রাক্তন কর্মকর্তা আব্দাল্লাহ হামদুকের নেতৃত্বে । এই সরকারে অসামরিক প্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর কয়েকজন জেনারেলও মন্ত্রিত্ব পান। অন্তর্বর্তী সরকার দেশের নতুন সংবিধান তৈরি করছিল।
কিন্তু সোমবার সুদান সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তা জেনারেল আব্দেল ফাতাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একাংশ অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ঘটায়। প্রথমে ক্ষমতা হস্তান্তরের কাগজে সই করার জন্য চাপ দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লাহ হামদুককে। তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁকে অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী। যদিও এখনও পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আনুগত্য জানিয়ে চলেছে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক সহ একাধিক সরকারি দফতর ।
সুদানের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার রাতেই বৈঠকে বসে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ । সেই বৈঠকের পরই আমেরিকা জানিয়ে দেয় তারা এই সামরিক অভ্যুত্থান মেনে নেবে না। অবিলম্বে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে প্রধানমন্ত্রী হামদুকের হাতে । এই পরিস্থিতিতে ভয়াবহ অর্থসঙ্কটে পড়া সুদানের ৭০০ মিলিয়ন ডলার ত্রাণসাহায্য আটকে দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।