হিন্দু শাস্ত্রে মৃত্যুর পর মৃতের কিছু পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করতে পণ্ডিতরা গয়া কাশি ধামে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পিতৃপক্ষ শুরু হয়েছে,আর এই সময় গয়ায় গিয়ে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে পিন্ডদান করলে তাঁদের আত্মা শান্তি পায়। ভারতীয় দর্শনে আত্মার মোক্ষলাভের একটা সহজ পথ হল এই পিন্ডদান। জনশ্রুতি আছে, রাজা দশরথের মৃত্যুর পর রাম – সীতা এখানেই পিন্ডদান করেছিলেন। এখানে পিন্ডদানের জন্য ৩৬০ টি বেদীর মধ্যে মাত্র ৪৮ টি রয়েছে। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ মানুষ এখানে পূণ্যলাভের উদ্দেশ্যে আসেন। পুরাণ মতে, গায়াসুর নামের এক অসুর তপস্যা করে ব্রহ্মার কাছে বর চেয়েছিলেন ঈশ্বরের মত অমরত্বের। তাকে দেখা মাত্রই মানুষ পাপ থেকে মুক্তি পাবে। গায়াসুর এই বর লাভ করার পরে মর্ত্যের জনগন পাপ করেও ছার পেয়ে যান। তারা স্বর্গে ভীড় জমান। এই বিপদ এড়ানোর জন্য দেবতারা গায়াসুরকে আদেশ দেন একটি স্থানে যজ্ঞের জন্য একটি পবিত্র স্থান নির্বাচন করতে। গায়াসুর শুয়ে পড়ায় তার শরীর জুড়ে বিরাট অংশ একটি পবিত্র ভূমিতে পরিণত হয়। যা আজকের গয়া।
পণ্ডিতরা জানান, পরিবারের একজন ব্যক্তি গয়ায় ফল্গু নদীর তীরে গিয়ে পিন্ডদান করতে পারবেন। আরও বলা হয় গয়া যাওয়ার জন্য যতগুলি পদক্ষেপ ফেলা হয় সেগুলি পূর্বপুরুষদের স্বর্গে যাওয়ার সিড়ির সংখ্যা। গয়ার কথা উল্লিখিত রয়েছে বিষ্ণু পুরাণ ও বায়ু পুরাণে। বিশ্বাস করা হয় এখানে পিতৃ দেবতার বাস। এখান থেকেই মোক্ষলাভ হয়। প্রতি বছর ১৭ দিন ধরে পিতৃপক্ষের দিনগুলিতে এখানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়।