প্রয়োজনে বীরভূম নিজেই দেখবো। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ভালো করে কাজ করতে হবে। অনুব্রতহীন বোলপুরে গিয়ে জেলা নেতৃত্বকে স্পষ্ট বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি এদিন নতুন কোর কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে জায়গা পেয়েছেন শতাব্দী রায়, অসিত মাল ও অনুব্রত বিরোধী কাজল শেখ। তবে কমিটিতে ঠাই পেয়েছেন অনুব্রত ঘনিষ্ঠ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাশাপাশি এদিন জমি বিতর্কের মাঝেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। শান্তিনিকেতনে প্রতীচীতে গিয়ে অমর্ত্য সেনের হাতে তাঁর জমি সংক্রান্ত নথি তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি বলেন, অমর্ত্য সেন যে তথ্য দিয়েছেন সেটাই তাঁর ঠিক বলে মনে হয়েছে। নোবেল জয়ীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বলেন, ‘বিশ্বভারতীকে রবীন্দ্রনাথের চোখে দেখি। গৌরীকীকরণের চোখে দেখি না। অশ্রদ্ধা করা কিছু লোকেদের অভ্যাস। জমির ভান্ডার থেকে জমি দেওয়া হয়েছিল বিশ্বভারতীকে। ১৯৮৪-এর পরের ল্যান্ড রেভিনিউ রিপোর্ট অনুযায়ী, যে জমিটা লিজে দেওয়া হয়েছিল তার পরিমাণ ১.৩৮ একর। এখন বিশ্বভারতীর দাবি, ১.২৫ একর জমি লিজে রাখার কথা! সেখানে অমর্ত্য সেন আরও ১৩ ডেসিমেল বেশি জমি অধিগ্রহণ করে রেখেছেন!’হিসেব কষে মমতা বুঝিয়ে দেন, বিশ্বভারতীর দাবি ভুল।

এদিন অমর্ত্য সেনের বাড়িতে গিয়ে তাঁর হাতে ওই জমির নথি তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই জমি বিতর্ক নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুললেন অমর্ত্য সেন। অমর্ত্য সেন বলেন, যারা আমাকে হঠাত্ বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলছেন তাদের বলব তাদের বোধের উপরে আমরা যে খুব একটা আস্থা রয়েছে তা বলতে পারছি না। তাই এনিয়ে খুব বিশাল একটা ঝড় উঠছে তা বলা যুক্তিযুক্ত বলে মনে হচ্ছে না। বিষয়টিকে বড় করার কোনও ইচ্ছে আমার নেই।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তথ্যের উপরে ভিত্তি করে সত্যিটা বলতে চাই। সেই জন্য়ই আমার ছুটে আসা। সম্মানের সঙ্গে জমির কাগজ তুলে দিয়ে গেলাম। আগামিদিনে বিজেপি যেন এভাবে অমর্ত্য সেনকে আর অসম্মান করার চেষ্টা না করে। তিনি আরও বলেন, “আমি ল্যান্ডের রেকর্ড নিয়ে এসেছে। আমি কয়েকদিন ধরে সরকারকে দিয়ে সার্ভে করিয়েছি।” হাতে থাকা নথি দেখিয়ে মমতা বলেন, “এটাই হল আসল ডকুমেন্ট।” সঙ্গে বেশ হুঁশিয়ারির সুরও শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। বলেন, “অনেকদিন ধরে সহ্য করছি। একজন মানুষকে অসম্মান করা হচ্ছে। আমরা আইনত কী করতে পারি, সেটা পড়ে জানিয়ে দেব।”
অন্যদিকে, এদিন অমর্ত্য সেনের বাড়ি প্রতীচীতে বসেই মমতা ফোন করেন রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যকে। ফোনে নির্দেশ দেন, অমর্ত্য সেনকে জেড প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। জমি সংক্রান্ত বিতর্কের আবহে মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশ স্বাভাবিকভাবেই যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।