বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এর সাথে সম্পর্কের জেরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে গত তিনবছর ধরে শিরোনামে শোভন চট্টোপাধ্যায়। এখন তাঁকে রাজনৈতিক ভাবে ‘সর্বহারা’ বললেও ভুল বলা হয়না কিছু। নিজের মন্ত্রিত্ব এবং কলকাতার মেয়র পদে ইস্তফা দিয়ে বৈশাখী সহ বিজেপিতে যোগদান করলেও প্রাপ্য সম্মান মেলেনি সেখানেও। ফলে হালেই বিজেপিও ছেড়েছেন শোভন বৈশাখী।
স্ত্রী রত্নার সাথে এখনো হয়নি আইনি বিচ্ছেদ। কিন্তু ইতিমধ্যেই সক্রিয় রাজনীতিতে পা রেখেছেন রত্না। এমনকি শোভনের সাথে আর কোনো সম্পর্কই নেই তাঁর একথাও সাফ জানিয়েছেন তিনি। এবার রত্না ভোটের ময়দানে লড়ছেন বেহালা পূর্ব কেন্দ্র থেকেই।
কিছুদিন আগে পর্যন্ত দুপক্ষের বাদানুবাদ এবং ব্যক্তিগত কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি শালীনতার মাত্রা অতিক্রম করলেও আজ বেহালার রায় বাহাদুর রোডের তৃণমূল কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রত্না স্পষ্টতই জানিয়েছেন ” শোভন আর আমার জীবনে নেই, তাই শোভনকে নিয়ে একটা কথাও শুনবনা আমি”।
বিজেপির কাছে ব্রাত্য হয়ে এইবার ভোটের ময়দানে অনুপস্থিত শোভন। সেই ব্যাপারেই প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে ওইকথা জানান রত্না। এমনকি এও বলেন যে শোভনকে নিয়ে কোনো কথা বলতেই আগ্রহী নন তিনি। এ’বছর স্বামীর কেন্দ্র বেহালা পূর্ব থেকেই প্রার্থী রত্না। শোভন চট্টোপাধ্যায় এখনো বিধায়ক পদে ইস্তফা না দিলেও গত তিনবছর তাঁকে দেখা যায়নি বেহালায়,বিজেপিতে যোগদানের পর একবার বৈশাখীকে নিয়ে নিজের এলাকায় গেলেও কালো পতাকা দেখে ফিরে আসতে হয় তাঁকে। বিধায়কের এই অনুপস্থিতিতে এলাকার ১১ কাউন্সিলর এবং রত্না নিজেই মানুষের পাশে থেকেছেন বলে দাবী রত্নার। শোভন ভোটে বেহালা পূর্ব থেকে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করলেও ব্যক্তিগত ‘কেচ্ছা’ সামনে আসার ভয়েই তাতে আমল দেয়নি বিজেপি। এই বদলে এই কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী করেছে অভিনেত্রী পায়েল সরকারকে। সেই সুযোগেই বেহালা পূর্ব কেন্দ্রে এবার তৃণমূলের তুরুপের তাস রত্না।
উল্লেখ্য, আদ্যান্ত রাজনৈতিক পরিবারে বর হলেও রত্নার প্রথম হাতেকলমে রাজনীতি শেখা স্বামী শোভনের দৌলতেই। এককালে স্বামীর সাথে প্রচারে বেরিয়ে গোটা এলাকাটাই হাতের তালুর মতন চেনা তিনি। তাই বিজেপির তারকা প্রার্থীর সাথে টক্করে যে এই এলাকায় তিনি বিজেপিকে দশো গোল দেবেন সে ব্যাপারে ঘোর আত্মবিশ্বাসী রত্না।