বাঙালির ভ্রমণের এক অন্যতম ঠিকানা পুরী। সুনীল জলরাশি, সোনালী বালুকাবেলা, সুস্বাদু খাবার, পশ্চিমবঙ্গের নানাপ্রান্ত থেকে যাতায়াতের সুবিধা, খাজা-ছানাপোড়া-মদনমোহন ও অন্যান্য মিষ্টির সম্ভার, নিকটবর্তী কোনারক সূর্যমন্দির, মন্দিরনগরী ভুবনেশ্বর, চিল্কা হ্রদ, ছাড়াও ওড়িশার পুরীর সবচাইতে বড়ো আকর্ষণ শ্রী জগন্নাথ মন্দির। মন্দির সংলগ্ন জগন্নাথ দেবের রান্নাঘর, যা আনন্দবাজার নামে পরিচিত – সেটাও ভক্তদের আগ্রহের অন্যতম আকর্ষণ। গড়ে উঠেছে মন্দিরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কিংবদন্তি।
বিশ্বজোড়া কোভিড মহামারীর আবহে এবার পুরী মন্দিরে দর্শনার্থীদের প্রবেশ সাময়িক ভাবে বন্ধ হচ্ছে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ওড়িশা প্রবেশের ওপর ওড়িশা সরকার এর মধ্যেই বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন।
শ্রী জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের জারি করা নির্দেশ মোতাবেক মন্দিরে জগন্নাথ দেবের নিয়মিত পূজার্চনা হবে। কিন্তু সাময়িক ভাবে পূজারী, এবং মন্দির কমিটির সদস্য বাদে বাকি দের প্রবেশ বন্ধ থাকবে। এই নির্দেশ আগামী ১৫ই মে ২০২১ পর্যন্ত।
আগামী রথযাত্রা নিয়ে সংশয় তৈরী হলেও মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে নিয়ন্ত্রিতভাবে রথযাত্রা আয়োজন করা হবে। ওড়িশা সরকারের Invasions on the Temple of Lord Jagannathan, Puri থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ইতিপূর্বেও ১৫৬৮-১৫৭৭ নবাব সুলেইমান কিরানীর সেনাপ্রধান কালাপাহাড়ের আক্রমণের কারণে, ১৬০১ সালে মির্জা খুরম মন্দির আক্রমণের কারণে, ১৬০৭ সালে মুঘল সুবেদার কাশিম খান মন্দির আক্রমণের কারণে, ১৬১১ ও ১৬১৭ তে আকবরের সেনাবাহিনীর আক্রমণের কারণে, ১৬২১ সালে সুবেদার আহমদ বেগের আক্রমণের কারণে, ১৬৯২-১৭০৭ আক্রম খানের আক্রমণের কারণে, ১৭৩১ এবং ১৭৩৩-১৭৩৫ মুহাম্মদ তকি খানের আক্রমণের কারণে পুরীতে রথযাত্রা বন্ধ ছিল। তবে ২০২০ সালে ভক্তসমাগম ছাড়াই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এই বছরের রথযাত্রা ১২ই জুলাই এবং রথযাত্রার প্রস্তুতি শুরু হওয়ার কথা অক্ষয় তৃতীয়া অর্থাৎ ১৫ই মে।