অবশেষে মঞ্জুর হল নারদা কান্ডে ধৃত চার হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার জামিনের আবেদন। এত চেষ্টার পরও ধোপে টিকলনা সিবিআইয়ের যুক্তি কিংবা প্রভাবশালী তত্ত্ব। সারাদিনের সিবিআই হেফাজতের পর অবশেষে মুক্তি পেলেন ফিরহাদ, শোভন,সুব্রত এবং মদন।৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডের পরিবর্তে জামিন মঞ্জুর করা হয় তাঁদের।
এদিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে ভার্চুয়াল শুনানি চলাকালীন সিবিআইয়ের তরফে অভিযুক্তদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আবেদন জানানো হয়। কিন্তু তা খারিজ করে পালটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন বিচারপতি অনুপম মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন চার্জশিট জমা পড়ার পর আবার এই অকারণ এবং অযৌক্তিক গ্রেফতারি কেন? চার্জশিট জমা পড়ার পর নতুন করে জেরা করার আর কিছুই থাকতে পারেনা। এরপর সিবিআই দাবী করে যে ধৃতরা সকলেই প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাই জামিন মঞ্জুর হলে প্রভাবিত করতে পারেন তদন্তকে। কিন্তু আদালতের কাছে ধোপে টেকেনি এই যুক্তি। ধৃতদের হয়ে সওয়াল করে আইনজীবী তথা তৃনমুল সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্রিয় ভাবে কাজ করছেন নেতা মন্ত্রীরা, তাই তাঁদের জামিন না দিলে বিধ্বস্ত হয়ে পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গ। এদিন রাজ্যপালের দিকেও তোপ দাগেন তৃণমূলের আইনজীবী। তিনি বলেন রাজ্যপালের কোনো অধিকার বা ক্ষমতাই নেই গ্রেফতারির আদেশ দেওয়ার। রাজ্য যা সুপারিশ করে শুধুমাত্র সেটাই অনুমোদন করতে পারেন তিনি। ধৃতদের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার কোনো অভিযোগ নেই বলেও দাবী করেন কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি মুকুল-শুভেন্দুর গ্রেফতার না হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এক যাত্রায় পৃথক ফল হওয়ারও অভিযোগ করেন। এই সমস্ত কিছুর পর এদিন সন্ধ্যে নাগাদ আদালত জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে চার অভিযুক্তের। যদিও নগর দায়রা কোর্টের এই শুনানির বিরোধিতা করে হাইকোর্টে যাবে সিবিআই এমনটাই জানা যাচ্ছে সূত্রের মাধ্যমে।
সোমবার সকাল থেকেই এই চার হেভিওয়েটের গ্রেফতারকে কেন্দ্র উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। কলকাতা সহ জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। সিবিআই দপ্তর নিজাম প্যালেসে ধর্ণায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও। একাধিক জায়গায় পোড়ানো হয় টায়ার,কুশপুত্তলিকা। বিভিন্ন মহল থেকে বারবার অভিযোগ উঠেছে যে রাজ্যে বিধানসভা ভোটে হারের প্রতিশোধ নিতেই এই ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও এমন চক্রান্ত চালাচ্ছে কেন্দ্র সরকার। যার প্রতিবাদে লকডাউন এবং করোনা বিধিকে অগ্রাহ্য করে রাস্তায় নামেন তৃণমূল কর্মীরা। সারাদিন বহু টানাপোড়েনের পর অবশেষে মিলল কাঙ্ক্ষিত ফল। ভোট পর্ব শেষ হলেও এটিকে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূলের আরও একবার জয় বলেই মনে করছেন অনেকে।