করোনা অতিমারির পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সমস্ত স্কুল-কলেজ গুলি । প্রথমে কয়েক মাস বন্ধই রাখা হয়েছিল সমস্ত পড়াশোনা। তারপর মুশকিল-আসান হয়ে সামনে এলো গুগোল মিট ,টিম লিংক -এর মত অ্যাপগুলি। তাতে যদিও বেশ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন ছাত্রছাত্রীরা কারণ একটানা ছুটি খেতে খেতে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন প্রত্যেকেই । স্কুলে বা কলেজে না গিয়েও বাড়ি থেকেই পঠন-পাঠন করছিলেন তাঁরা। তাতে কোনো সমস্যার কিছুই ছিল না ,এমনকি যেসমস্ত ছাত্রছাত্রীরা মোবাইল রিচার্জ করতে পারছিলেন না তাদেরকেও উপযুক্ত ব্যবস্থার জন্য আবেদন জানালে করে দেওয়া হয়েছে কোনো না কোনো ব্যবস্থা।
তবে এতে কি থেমে থাকবে শিক্ষা ব্যবস্থা । সামনে বঙ্গ ভোট ,উন্নয়ন তো দেখাতেই হবে, না হলে গদি পাল্টানোর সম্ভাবনা থেকেই যায়। তাই এবছরের নতুন উন্নয়ন অনলাইন পড়াশোনা। আচ্ছা মেনে নিলাম থিওরি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা ছাত্রছাত্রীরা না হয় অনলাইনে পড়ে নিলেন। কিন্তু যাদের প্র্যাকটিক্যাল বিষয়ে অনার্স তারা ঠিক কি করবেন ? আর্ট কলেজগুলির ছাত্র-ছাত্রীদের যে দূরঅবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে তার কোনো সুরাহা করা সম্ভব হয়েছে কি? ওদিকে পঠন-পাঠন চলছে আর পরীক্ষা হবে না, সে কি হয় নাকি? না আমি পরীক্ষা বিরোধী নই তবে সেটাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য যথাসাধ্য দায়িত্ব নিয়ে এগোনো উচিত সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের। আর সেই কারণেই তড়িঘড়ি করে ক্লাসের সিলেবাস শেষ করিয়ে পরীক্ষার মুখে ঠেলে দেওয়া হয় ছাত্র-ছাত্রীদের । উপযুক্ত বই নেই ,শিক্ষকরা ম্যাটেরিয়ালস দিতে পারছেন না। কেউ আবার লকডাউনে সমস্ত বই খাতা নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হোস্টেলে রেখে বাড়ি চলে এসেছে। এর মধ্যে শুরু হলো পরীক্ষার ফরম ফিলাপ। আচ্ছা ধরুন ফাইনাল ইয়ারে থাকা ছাত্র বা ছাত্রীটি যদি সার্ভার বসে যাওয়ার কারণে এনরোলমেন্ট না করাতে পারে, অথবা পরীক্ষার দিন কোন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে যদি তাঁর খাতাটি জমা না নেওয়া হয় । অথবা ধরুন যেভাবে পিডিএফ ফরম্যাটে খাতা জমা দিতে হয় সেখানে কোন পেজের লেখা অস্পষ্ট গেলে কিসের ভিত্তিতে নাম্বার দেবেন পরীক্ষক! সমস্যায় পড়লে হেল্পলাইনে ফোন করলে সব সাফ জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে” আমাদের কিছু করার নেই”। একজন ছাত্র ছাত্রীর একটা গোটা বছর নষ্ট হয়ে যেতে পারে শুধুমাত্র এই সার্ভার বসে যাওয়ার কারণে শুধুমাত্র একটা এনরোলমেন্ট না হওয়ার কারণে, এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কি উত্তর দেবে রাজ্য সরকারের শিক্ষা দপ্তর ?