বাতিল হল মুখ্যমন্ত্রীর শীতলকুচি সফর। গতকাল পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায়, ছিল বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থদফার নির্বাচন। গতকাল এই চতুর্থ দফার ভোট গ্রহণ পর্বকে কেন্দ্র করে ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। নির্বাচন চলাকালীন কোচবিহারের শীতলকুচিতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে এসে মৃত্যু হয় পাঁচ জনের। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন , তিনি কোচবিহারের শীতলকুচি সফরে যাবেন। এখনও পর্যন্ত ঘটনা তদন্ত সম্পন্ন না হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ঘটনা ঘটার আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত কোচবিহারের শীতলকুচিতে কোন রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রবেশ নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বাধ্যতামূলকভাবে বাতিল হয় মুখ্যমন্ত্রীর সফর। এই পরিপ্রেক্ষিতে সৌগত রায় বলেছেন ,মুখ্যমন্ত্রীর সফর বাতিল করার উদ্দেশ্যেই কমিশনের তরফ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গতকাল রাতে বেলাকোবাতে উদ্ধার হয় তাজা বোমা। ফলে এলাকায় ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
গতকাল শীতলকুচিতে ভোট চলাকালীন, সকাল বেলায় ১৮ বছর বয়সী সদ্য ভোটাধিকার প্রাপ্ত আনন্দ বর্মন নামে এক যুবকের মৃত্যু হয় দুষ্কৃতীদের গুলিতে। উত্তপ্ত শীতলকুচিতে ঘটনা আরও বড় আকার ধারণ করলে, এরপর সিআরপিএফের গুলিতে প্রাণ হারান আরও চারজন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী দোষীদের যথাযোগ্য শাস্তির দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনের কাছে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো অভিযোগ করেছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কমান্ডেই গুলি চালিয়েছে সিআরপিএফ।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এবার প্রশ্ন থাকছে সাধারণ মানুষের, নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে এসে যদি মৃত্যুই হয় তাহলে নিরাপত্তা কোথায়? যদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারেই গুলি চালিয়ে থাকে সিআরপিএফ, তাহলে সেখানে কি নির্বাচন কমিশনের নীতিভঙ্গ হচ্ছে না? পাশাপাশি প্রশ্ন থাকছে ঠিক কি এমন ঘটেছিল যার জন্য ভোটদান কেন্দ্রের বাইরে গুলি চালাতে হল নিরাপত্তা বাহিনীকে? আর যদি কেবলমাত্র পরিস্থিতি শান্ত করতেই গুলি চালানো হয়ে থাকে ,তাহলে হাটুর নিচে কেন গুলি করা হলো না ? কেনই বা এমন ভাবে গুলি করা হলো যাতে নৃশংস ভাবে মৃত্যু হল চারজনের? কেনইবা ৭২ ঘন্টা উত্তরবঙ্গে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন ?