এই অতিমারি পরিস্থিতির সম্ভবত সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনার স্বাক্ষী রইল অন্ধ্রপ্রদেশ। হাসপাতালের বাইরেই পড়ে থেকে মৃত্যু হল একরত্তি এক শিশুর। বাবা মায়ের বুকফাটা কান্না পৌঁছল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কান অবধি। হাসপাতালের বাইরে অ্যাম্বুলেন্সেই দেড় বছরের শিশুকে নিয়ে বসে থাকলে হল বাবা মাকে। এদিকে চোখের সামনেই বেঁচে থাকার যুদ্ধে হাল ছেড়ে দিল দুধের শিশু। তবুও মিলল না চিকিৎসা। করোনা আক্রান্ত মেয়েকে চিকিৎসা করাতে বিশাখাপত্তনমের কিং জর্জ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন দম্পতি। অসহায় অবস্থায় আর্তনাদ করেও মেয়েকে হাসপাতালেই ভর্তি করাতে পারলেন না বাবা-মা। অবশেষে মৃত্যু দেড় বছরের সরিথার। “কেউ আমার মেয়েটাকে একটু বাঁচান। রাস্তায় ছেড়ে চলে গিয়েছে। দয়া করে বাঁচান”, সরিথার বাবার এই কাতর চিৎকারেও ফল মেলেনি কোনো। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে মেয়েকে হাসপাতালের এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে ভর্তি করার চেষ্টা চালিয়েছেন ওই দম্পতি। কিন্তু কিছুতেই সফল হননি তাঁরা। চোখের সামনেই মারা যায় দেড় বছরের শিশু।
সরিথার মৃত্যুর পরই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় হাসপাতাল চত্ত্বর। আত্মীয় স্বজনেরা এসে হাসপাতালে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ দেখান।কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী ভর্তিতে দেরি হওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে জানিয়েছে, করোনার জন্য মৃত্যু হয়েছে তার। চিকিৎসা দিয়ে লাভ হয়নি কোনো।
দেশজুড়ে দাবানলের মত বেড়ে চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য পরিসেবা, পরিকাঠামো। হাসপাতালে মিলছেনা বেড। হাহাকার অক্সিজেনের জন্য। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েও একরত্তির মৃত্যুতে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়।কিছুতেই যেন কেউই মেনে নিতে পারছেন না এই নিদারুণ মর্মান্তিক ঘটনা। ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের স্বাস্থ্য পরিসেবা, এই ঘটনায় বারবার উঠছে এই প্রশ্ন।