কাশ্মীর ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে জঙ্গিরা। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে কাশ্মীর ছাড়ার হিড়িক পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শ্রীনগর বাসস্ট্যান্ডে চোখেমুখে আতঙ্ক নিয়ে কাশ্মীর ছাড়ার জন্যে ভিড় জমিয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। জীবন জীবিকা ভুলে এখন শুধু প্রাণে বেঁচে থাকাটাই প্রধান এই পরিযায়ী শ্রমিকগুলির কাছে। গত কয়েক দিনেই উপত্যকায় মোট ১১ জন সাধারণ মানুষকে মেরে ফেলেছে জঙ্গিরা। নিহতদের মধ্যে পাঁচ জন পরিযায়ী শ্রমিক। নির্বিবাদে এই হত্যালীলা ভয় ধরিয়েছে বছরের পর বছর কাশ্মীরে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের মনে। যদিও নিরাপত্তারক্ষীরা জানিয়েছেন, তাঁরা অন্য রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের সুরক্ষার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এই আশ্বাসে ভরসা পাচ্ছেন না শ্রমিকরা।
কাশ্মীর পুলিশের এক আধিকারিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, “আমরা প্রায় এক হাজার পরিযায়ী শ্রমিককে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে গিয়েছি। তাঁদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” শুধু তাই নয়, যে সব এলাকায় জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছে সেখানে বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে। এছাড়াও চলছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি। তার পরেও মানুষের মন থেকে দূর হচ্ছেনা মৃত্যুভয়। রবিবার কুলগাম জেলায় একটি ভাড়া বাড়িতে ঢুকে বিহার থেকে আসা দুই শ্রমিককে হত্যা করে জঙ্গিরা। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে আরও এক জন। গত ছ’বছর ধরে রোজগারের তাগিদে কাশ্মীরেই রয়েছেন বিহারের বাসিন্দা ৩২ বছরের মহম্মদ সালাম। কিন্তু রবিবারের এই ঘটনার পরে বাড়ি ফিরতে চাইছেন তিনিও। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “আমরা অনেক খারাপ সময় দেখেছি, কিন্তু কোনও দিন আমাদের নিশানা করা হয়নি। এ বার ভয় লাগছে। এ ভাবে কত দিন বসে থাকব। আমরা নিজেদের বাড়ি ফিরতে চাই।” ভূস্বর্গ এখন যেন শুধুই এক অশান্ত উত্তপ্ত উপত্যকা; যেখানে বন্দুকের নলের মুখ থেকে কিভাবে বেঁচে থাকা যায় সেই প্রশ্নের কোনো জবাব অমিল।