পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ-এর উদ্যোগে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান কর্মসুচীর ডাক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামের অরাজনৈতিক সংগঠনের নবান্ন অভিযান কর্মসূচিকে ঘিরে শহরে অশান্তি ছড়ানো হতে পারে বলেই আশঙ্কা কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের। একইদিনে রয়েছে ইউজিসি নেট পরীক্ষা। নবান্ন অভিযানের নামে অশান্তি যাতে ছড়িয়ে না পড়ে বা কোনভাবে শহরের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয় তার জন্য কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে লালবাজার। নবান্ন অভিযানকে সামনে রেখে যাতে কলকাতা এবং হাওড়ায় কোনও ধরণের গোলমাল কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য মঙ্গলবার শহরের রাস্তায় মোতায়েন থাকবে অতিরিক্ত ৪ হাজার পুলিশ।
অন্যদিকে মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানকে বেআইনি বলে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ কুমার ভার্মা। সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে মনোজ কুমার ভার্মা বলেন, ‘নবান্ন সংরক্ষিত এলাকা। এখানে সাধারণত কোনও কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া যায় না। ফলে আমরা মনে করি আইনগতভাবে এই কর্মসূচি বেআইনি’। যাঁরা এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন, তাঁরা যদি নবান্ন এলাকার পরিবর্তে অন্য কোথাও করেন তাহলে প্রশাসনের আপত্তি নেই বলেও সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন তিনি। এ’দিনের সাংবাদিক বৈঠকে মনোজ কুমার ভার্মা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সুপ্রতিম সরকার।
সাংবাদিক বৈঠকে দুই এডিজি-র বক্তব্য, পুলিশের কাছে খবর আছে, নবান্ন অভিযানের মিছিল থেকেই গন্ডগোল পাকানোর জন্য উস্কানিমূলক পরিস্থিতি তৈরি করা হবে। সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার সময় পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নিলেই মিছিলের আহ্বায়করা ফায়দা তোলার চেষ্টা করবেন বলেও মনে করছে পুলিশ।
পুলিশ কর্তারা আরও জানান, নবান্ন হল রাজ্যের প্রধান সচিবালয়। ফলে নবান্ন এলাকায় একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি মানুষের উপস্থিতি বেআইনি। সেটি আয়োজকদের বলাও হয়েছিল। কিন্তু আয়োজকদের পক্ষ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি বলেও সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।
নবান্ন অভিযানে যেন কোনোভাবেই হিংসাত্মক ঘটনা না ঘটে তার জন্য শহরের ৭ টি জায়গায় ব্যারিকেড করা হয়েছে। ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি চালানোর পাশাপাশি নবান্ন ভবন ঘিরে থাকবে হাওড়া কমিশনারেটের প্রায় ২ হাজার পুলিশ। অভিযানের সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে পুলিশবাহিনীকে নির্দেশ দেবেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিকরাও। নামানো হচ্ছে জলকামান ও ‘বজ্র’।
অন্যদিকে লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার থেকে দ্বিতীয় হুগলি সেতু এবং হাওড়া ব্রিজ দিয়ে যাতে কেউ নবান্ন অভিমুখে যেতে না পারেন, সে জন্য ধর্মতলা, হেস্টিংস ক্রসিং, দ্বিতীয় হুগলি সেতু, হাওড়া ব্রিজ, রেসকোর্সের গেট, টার্ফ ভিউ এবং নবান্নের কাছে ব্যারিকেড করবে পুলিশ। ত্রি স্তরের ব্যারিকেডে গার্ডরেলের বলয় ছাড়াও থাকছে বাঁশের তৈরি সিজার ব্যারিকেড। তৃতীয় বলয়ে থাকছে ইস্পাতের গার্ড ওয়াল। প্রত্যেকটি ব্যারিকেড সামলানোর দায়িত্বে থাকছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও যুগ্ম পুলিশ কমিশনার পদ পর্যাদার পুলিশ আধিকারিক। পাশাপাশি পরিস্থিতি সামাল দিতে থাকবেন একাধিক ডিসি, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ও ইন্সপেক্টর।