রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল সরকার। তারপরেই জঙ্গলমহলে মাওবাদী কার্যকলাপের যুক্ত চার জেলার ২২০ জনকে স্পেশাল হোম গার্ডের চাকরি দিল নবান্ন। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে ভার্চুয়ালি ওই চাকরির নিয়োগপত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেন প্রাক্তন মাওবাদীদের হাতে। ওই একই সময়ে বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকের কার্যালয়ে একটি অনুষ্ঠান হয় আর সেখানেই সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার ও জেলা শাসকের উপস্থিতিতেই এই প্রাক্তন মাওবাদীদের হাতে ওই সমস্ত নিয়োগপত্র গুলি তুলে দেওয়া হয়।এই ২২০ জনের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের ১১০ জন, ঝাড়গ্রামের ৮০ জন, পুরুলিয়ার ১৯ জন, বাঁকুড়ায় ১১ জন রয়েছেন। উল্লিখিত চার জেলায় মহিলা রয়েছেন ২৩ জন। তবে এর মধ্যে সকলেই যে মাওবাদী স্কোয়াডে ছিলেন তেমনটা নয়। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে জঙ্গলমহলে কোণঠাসা হচ্ছে মাওবাদীরা। তবে বাংলার সীমান্তের ঝাড়খন্ডে তাদের কার্যকলাপ একই রকম ভাবে চলছে। এখনও পর্যন্ত এই রাজ্যের ৬ মাওবাদী নেতাকে আত্মসমর্পণ করাতে পারেনি বাংলার পুলিশ। তাদেরকে নিয়ে ক্রমশ চিন্তা বাড়ছে ঝাড়খন্ড এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের।
বাংলায় বিধানসভা ভোটের আগের থেকেই মাওবাদীদের অত্যাচারে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসা এক সময়কার মাওবাদী কার্যকলাপের যুক্ত থাকা মানুষজন এই চাকরির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। একাধিক পোষ্টার দিয়ে এই তিন জেলায় চাকরির জন্য বিক্ষোভ করেছিলেন মাওবাদীরা। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে কখনও আস্থা হারাননি তাঁরা। ভোটের আগে যে কথা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভোটে জেতার পরেও সেই কথা রেখে চাকরির নিয়োগপত্র দিলেন।প্রাক্তন মাওবাদীরা এতেই বেজায় খুশি। মেদিনীপুরের ১১০ জনের মধ্যে ১০৪ জন পুরুষ এবং ৬ জন মহিলা রয়েছেন। ঝাড়গ্রামে ৮০ জন এর মধ্যে পুরুষ ৬৮ জন মহিলা রয়েছেন ১২ জন। পুরুলিয়ায় ১৯ জন এর মধ্যে পুরুষ রয়েছেন ১৫ জন মহিলা চারজন। বাঁকুড়ায় ১১ জনের মধ্যে ১০ জন পুরুষ একজন মহিলা। এই স্পেশাল হোমগার্ড বর্তমান বেতন মাসে ১৭০০০ টাকা। এছাড়াও চিকিৎসা এবং ঘর ভাড়া বাবদ মাসে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হবে। তবে মাওবাদী স্কোয়াড থেকে যারা আত্মসমর্পণ করেছেন এই প্যাকেজের আওতায় কেবলমাত্র তাদেরকেই চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।