খড়গপুর আইআইটির বিজ্ঞানীদের নয়া সাফল্য।মোবাইলের ভেঙে যাওয়া ডিসপ্লে এবার জোড়া লাগানো যাবে খুব তাড়াতাড়ি। এই অভাবনীয় আবিষ্কারে হাত রয়েছে খড়গপুর আইআইটির একদল বিজ্ঞানীর। ৬ জন বিজ্ঞানীর দলে তিনজন ছিলেন বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ আর বাকি ৩ জন ছাত্র গবেষক। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন এন্ড রিসার্চ সেন্টার কলকাতার বিজ্ঞানী, ড: সি. মাল্লা রেড্ডি রসায়ন বিভাগে গবেষণা করছেন বহু বছর ধরে। হঠাৎই একদিন ডিসপ্লে জুড়ে যাওয়ার ব্যাপারটি চোখে পড়ে তাঁর। এরপরই তিনি নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন ডিসপ্লেতে থাকা ক্রিস্টাল লিকুইড নিয়ে। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি খড়গপুর আইআইটি তত্ত্বাবধানে খড়গপুর আইআইটির গবেষক ড: ভানু ভুষণ খাটুয়া ও ড: নির্মাল্য ঘোষের সহযোগিতায় আরও ৩ জন গবেষক ছাত্র বিজ্ঞানীকে নিয়ে শুরু করেন চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা-নিরীক্ষা।জানা যাচ্ছে ৩ জন ছাত্র গবেষক বিজ্ঞানীই পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর ,পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলার বাসিন্দা।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ৬ জন বিজ্ঞানী মিলে মোবাইলের ডিসপ্লে তে থাকা ক্রিস্টালের অটোমেটিক হিলিং প্রক্রিয়ার যুগান্তকারী আবিষ্কার করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে নয়া সাফল্য এনে দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তাঁদের এই অভাবনীয় আবিষ্কার কে স্বীকৃতি জানিয়েছে আমেরিকার বিশিষ্ট জার্নাল সংস্থা ‘সায়েন্স’। খড়গপুর আইআইটির গবেষক ড: ভানু ভুষণ খাটুয়া এবং তার ছাত্র সুমন্ত কুমার লক্ষ্য করেন মোবাইল ডিসপ্লের মধ্যে থাকা ক্রিস্টালগুলি যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তর করতে সক্ষম। পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় এই পদ্ধতিকে পিয়েজো-ইলেক্ট্রোসিটি বলা হয়।বর্তমান প্রযুক্তিতে যেকোনো ধরনের এলসিডি বা মোবাইল ডিসপ্লে তৈরি করার ক্ষেত্রে এই পিয়েজো-ইলেক্ট্রোসিটি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় । বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এক্ষেত্রে সেখানে পিয়েজো-ইলেক্ট্রোসিটি ক্রিস্টাল ব্যবহার করলে ডিসপ্লেগুলি অনেক উন্নত মানের এবং দীর্ঘমেয়াদী হবে। বিজ্ঞানীরা এও জানিয়েছেন যে ,মহাকাশযান এবং রোবটের ক্ষেত্রেও কেলাসের অটোমেটিক হিলিং বা স্ব-মেরামতি বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রসঙ্গ উল্লেখ্য, এর আগেও বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা নিজের থেকে জুড়ে যাবে এমন জৈব পদার্থের আবিষ্কার করেছিলেন যা থকথকে ও নরম প্রকৃতির। খড়গপুর আইআইটি এবং কলকাতা আইআইএসইআর এর ৬ জন বিজ্ঞানীর গবেষণা দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে, তাঁরা যে জৈব পদার্থের আবিষ্কার করেছেন তা আগের থেকে ১০ গুণ বেশি কঠিন ও মজবুত। এই অভাবনীয় আবিষ্কারের মাধ্যমে এই ৬ জন বিজ্ঞানী পশ্চিমবঙ্গ সহ সারা বিশ্বে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।