বিগত কয়েক বছর ধরে মদন মিত্রের ফেসবুক লাইভ একপ্রকার সেনসেশনে পরিনত হয়েছে বাংলায়। স্যোশাল মিডিয়ায় তাঁর মতন পপুলার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খুব কমই আছেন।”আমি মদন মিত্র লাইভে আছি” কিংবা “ওহ লাভলি” এগুলি এক একটা ক্যাচলাইন হয়ে উঠেছে রাজ্যের ‘ইয়ুথ জেনারেশনের’ কাছে। কখনও হলুদ রোদচশমা, আবার কখনও বা লাল পাঞ্জাবি পরে বাংলা ছবির গান; এককথায় সুপার ডুপার হিট ‘#MMLive’ । কিন্তু আজ থেকে আর শোনা যাবেনা লাইভে এসে সেই চির পরিচিত “আমি মদন মিত্র লাইভে আছি”। মদন মিত্র নিজেই জানিয়েছেন সেকথা। গতকালের বৈঠকে দলের সাংগঠনিক ভোল বদলে ফেলেছে তৃণমূল। নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে নেতা নেত্রীদের স্যোশাল মিডিয়ায় যা ইচ্ছা পোস্ট করাতেও। আর সেই নিষেধাজ্ঞা মাথা পেতে মেনে নিয়েই এহেন সিদ্ধান্ত মমতার একনিষ্ঠ সৈনিক মদন মিত্রের।

এদিন সাদা পাঞ্জাবি পরে স্বমেজাজেই লাইভে আসেন তিনি। তাঁর কথা মতন এটিই ” সম্ভবত” এধরনের শেষ লাইভ। এদিন লাইভে এসে আজীবন দলের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিই দেন তিনি। তাঁকে বলতে শোনা যায় “২২ মাস জেলে ছিলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক এবং কামারহাটির ছেলেরা না থাকলে বাঁচতাম না। রাজ চক্রবর্তী তোমায় রাজ অভিষেক করে দেব।” এমনকি প্রাক্তন বাম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন তিনি। তিনি বলেন “ঋতব্রত তোমার পাশে থাকব। দুজনে গোপন ঘর করব। গোপন গোপন বই এনে পড়ব। লেনিন, স্ট্যালিন কী করতেন তা নিয়ে আলোচনা করব আমরা।” তৃণমূলের সাংগঠনিক পদে গতকালই বসলেন যাঁরা তাঁদের প্রত্যেকের বাড়িতে ফুল- মিষ্টি পাঠাবেন বলেই জানান তিনি। যদিও এদিন বোধহয় একটু হলেও ভারীই ছিল তাঁর গলা। ফেসবুক লাইভ প্রসঙ্গে ভারী গলাতেই তাঁকে বলতে শোনা যায় “দিদির কাছে মদন মিত্রের ফেসবুকের থেকে ফেসভ্যালুর দামটা বেশি।”
তারপর অবশ্য হাসিমুখেই মদন জানিয়েছেন, “কাল থেকে সেই মদন মিত্রকে আর পাবেন না, যাকে কথায় কথায় পেতেন। দোলাও দোলাও দোলাও আমার হৃদয়। চন্দ্রিমাদি বলছিলেন, তোমার ফেসবুকটা এত মানুষ দেখেন, বরাবর একটা স্ট্র্যান্ডার্ড মেন্টেন করো।” প্রসঙ্গত গতকাল ফেসবুক লাইভে এসে কামারহাটির প্রশাসক হওয়ার আবেদন করে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানান, কামারহাটি, বরানগর থেকে হালিশহরের চেহারা পাল্টানোর পাশাপাশি বিটি রোডকে গ্র্যান্ডট্রাঙ্ক রোডে পরিণত করার দায়িত্ব তিনি নেবেন, পরিবর্তন করবেন তিন মাসেই । যদিও তা নিয়ে বেশ চটেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তারপরই এদিন এহেন সিদ্ধান্তের কথা জানালেন মদন। আজ থেকেই “#MMlive” কে মিস করবেনা এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে বলেই মনে করছেন অনেকে।