লোকসভা নির্বাচন ২০২৪-এ। এক বছর আগে থেকেই কেন্দ্রের গদি দখল করতে উঠে-পড়ে লেগেছে শাসক-বিরোধী দল। রবিবার যখন নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন হচ্ছে, সেই সময়ই বিরোধী দলগুলি কোমর বেঁধে নামল জোট বাধতে। রবিবারই জানা যায়, বিহারের মুখ্য়মন্ত্রী তথা জনতা দল (ইউনাইটেড)-র সুপ্রিমো নীতীশ কুমার বিরোধী জোটের জন্য বৈঠকের ডাক দিয়েছে। আগামী ১২ জুন পটনায় বিরোধীদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস, এনসিপি, আরজেডি সহ একাধিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কংগ্রেসকেও। কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী জানান, নীতীশ কুমারের ডাকা এই জোটের বৈঠকে তাঁদের দলের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। তিনি আরও বলেন, “মোদীকে হারানোর সুযোগ এটা। আমি প্রথমদিন থেকেই এই কথা বলে আসছি। কিছু বিরোধীরা একমত হয়েছিলেন, কেউ কেউ বিরোধিতা করেছিলেন। মূলত কিছু আঞ্চলিক দলই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাধা নিয়ে সমস্যা।”
কয়েকদিন আগে কলকাতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, জেডিইউয়ের নীতীশ এবং আরজেডি-র তেজস্বী, জে়ডিএসের এইচ ডি কুমারস্বামী, আপের অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও ভগবন্ত মান। দিল্লির বদলে পটনায় বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে বৈঠক করার কথা নীতীশের সঙ্গে বৈঠকে তুলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। অন্য দিকে, নীতীশের দায়িত্ব ছিল বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সমন্বয় করা। শেষে তিনি দিল্লিতে আলোচনায় বসেছিলেন কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী এবং খাড়গের সঙ্গে। তার পরেই সব বিরোধী দলকে ডেকে বৈঠকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে বলে সূত্রের খবর। রাহুলের চলে যাওয়ার কথা আমেরিকায়। তার ফলে তিনি এখন নিজে থাকতে পারবেন না। সূত্রের খবর, নীতীশদের ডাকা বৈঠকে খাড়গে থাকতে পারেন।
কর্নাটকে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যাওয়ায় জেডিএস এমনিতেই এখন কোণঠাসা। পটনার বৈঠকে জেডিএস থাকবে কি না, সেই প্রশ্ন আছে। শরদ পওয়ারের এনসিপি এবং কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের বিআরএস-ও বৈঠকে থাকতে পারে বলে সূত্রের ইঙ্গিত। সম্ভবত ১১ জুন পটনা চলে যেতে পারেন মমতা। বিজেপিকে আগামী লোকসভা ভোটে পরাস্ত করার লক্ষ্যে সার্বিক বিরোধী ঐক্যের কথাই এখন বলছেন তিনি। তবে বিজেপির বিরোধিতায় কংগ্রেসকে সমর্থনের বিনিময়ে এ রাজ্যে তাদের তৃণমূল-বিরোধিতা ছাড়তে হবে বলে যে কথা মমতা বলেছেন, তাতে রাজি নয় বাংলার কংগ্রেস দল। রাজ্যে বিরোধিতা চলবে বলেই স্পষ্ট করেছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এখন পটনায় সব বিরোধী দলের বৈঠকের পরে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সে দিকে নজর থাকবে রাজনৈতিক শিবিরের।