আরজি কর কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত চলছে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় এবার মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় সহ ছ’জনের পলিগ্রাফ টেস্ট শুরু করল তদন্তকারী আধিকারিকরা। সিবিআই সূত্রে খবর, মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ টেস্ট করা হবে জেলে। পাশাপাশি আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষেরও পলিগ্রাফ টেস্ট করবে তদন্তকারী আধিকারিকরা। এছাড়াও ঘটনার রাতে কর্তব্যরত চার চিকিৎসক এবং একজন সিভিল ভলান্টিয়ার-সহ বাকি ছ’জনের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছে সিবিআই আধিকারিকরা। ইতিমধ্যে দিল্লির সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (CFSL) পলিগ্রাফ বিশেষজ্ঞদের একটি দল কলকাতায় পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের তরফে সুপ্রিম কোর্টকে জানানো হয়, স্থানীয় পুলিশ তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। মনে করা হচ্ছে, আসল সত্য কি! তা জানতেই পলিগ্রাফ টেস্ট করছে সিবিআই। প্রসঙ্গত, এর আগে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের পলিগ্রাফ টেস্ট করতে চেয়েছিল তদন্তকারী আধিকারিকরা। প্রাক্তন অধ্যক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু প্রশ্নের উত্তরে ‘অসঙ্গতি’ খুঁজে পায় সিবিআই। যে কারণেই লাই ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করতে চেয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। সেমত আদালতের কাছ থেকে পলিগ্রাফ টেস্টের অনুমতিও নিয়েছিল সিবিআই।
গত ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হলে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের দু’দিন পর অধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দেন সন্দীপ ঘোষ। তারপর থেকে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার সিবিআই জেরার মুখে পড়েছেন তিনি। ওই চিকিৎসককে খুনের পেছনে কোন ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে। এক তদন্তকারী আধিকারিক জানান, “আমরা সন্দীপ ঘোষের উত্তরগুলি আরও যাচাই করতে চাই, কারণ তাঁর কিছু প্রশ্নের উত্তরে অসঙ্গতি রয়েছে। তাই আমরা তাঁর পলিগ্রাফ টেস্ট করানোর কথা ভাবছি।”
কী এই পলিগ্রাফ টেস্ট?
কোনও ব্যক্তি সত্যি বলছে না মিথ্যে, তা জানতেই এই বিশেষ পলিগ্রাফ পরীক্ষা করা হয়। সাধারণত কোনও অপরাধ সংগঠিত হলে, অপরাধীকে ধরার জন্য, বা দোষীকে চিহ্নিত করার জন্য এই বিশেষ পরীক্ষার সাহায্য নেওয়া হয়।
এই পরীক্ষা করার সময়, যার পরীক্ষা করা হচ্ছে তাঁকে সেই অপরাধ বা সেই ঘটনা সম্পর্কিত এবং অনান্য বিষয়েও নানা প্রশ্ন করা হয়। সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় তাঁর হার্টবিট, পালস রেট, স্নায়ুর চাপ কতটা এগুলির রিপোর্ট গ্রাফিক্যাল ফরম্যাটে নিয়ে এসে তারপর তা বিশ্লেষণ করা হয়। অনেকগুলি গ্রাফিক্যাল রেকর্ড তৈরি করে তা বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণ করে দেখেন, সেই ব্যক্তি সত্যি কথা বলছেন না মিথ্যা কথা বলছেন।