আদিবাসী সমাজের একটি পৃথক ধর্ম ‘সারনা ধর্ম কোড’ চালু সহ ৫ দফা দাবিতে রাজ্যজুড়ে আদিবাসীদের রেল অবরোধ। শনিবার সকাল থেকে জেলায় জেলায় ‘রেল রোকো’ চলছে। পূর্ব বর্ধমানে জৌগ্রাম, মেদিনীপুরের খেমাশুলি, পুরুলিয়ার কাঁটাডিতে সকাল থেকেই রেল অবরোধ করেন আদিবাসীদের সামাজিক সংগঠন ‘আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান’। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেরও একাধিক জায়গায় পথ অবরোধ হয়।
এদিন ‘আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান’-এর উত্তরবঙ্গের জেনারেল প্রেসিডেন্ট মোহন হাঁসদা বলেন, ‘কেন্দ্র এখনও সারনা ধর্মের কোড চালু করেনি। যাঁরা প্রকৃত আদিবাসী তাঁদের এসটি তালিকায় নাম তোলা হয়নি। এছাড়াও সংগঠনের তরফে আরও কিছু দাবি রয়েছে। আর এই দাবিগুলিকে সামনে রেখেই আমরা রেল রোড চাক্কা জ্যাম কর্মসূচি নিয়েছি।’ মালদা এবং পুরুলিয়া জেলাতেও এই আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে। আদিনা রেল স্টেশনে শুরু হয়েছে রেল রোকো। এর ফলে বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়েছে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন। ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে যাত্রীদের।
বাংলার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, অসমেও রেল ও পথ অবরোধ চলে সকাল থেকে। যদিও পরে রেলপুলিশের হস্তক্ষেপে সে অবরোধ ওঠে। তবে সকাল ৬টা থেকে প্রায় দুঘণ্টা অবরোধের জেরে বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল ও কয়েকটি ট্রেনকে ঘুরপথে চালাতে হয় খড়গপুর ডিভিশন থেকে। সকাল থেকে অবরোধ চলে পুরুলিয়ার কাঁটাডি স্টেশনেও। এর জেরে দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা পুরুলিয়া চাণ্ডিল শাখায় বেশ কিছু যাত্রীবাহী ট্রেন আটকে পড়ে। সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা।
রেলপথের পাশাপাশি কলকাতা-মুম্বই ৬ নম্বর জাতীয় সড়কেও অবরোধ চলছে। রেলের খড়্গপুর ডিভিশনে ইতিমধ্যেই টাটানগর স্টিল এক্সপ্রেস, টাটানগর প্যাসেঞ্জার, খড়্গপুর প্যাসেঞ্জার, টিটলাগড় ইস্পাত এক্সপ্রেস-সহ একাধিক ট্রেন বাতিল করেছে। পুরুলিয়ায় আদিবাসীদের মারাংবুরু অর্থাৎ পরেশনাথ পাহাড়কে জৈন ধর্মের মানুষের হাতে তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে তা পুনরায় আদিবাসীদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া ও সারনা ধর্মের কোড চালুর দাবিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য রেল অবরোধের ডাক আগেই দিয়েছিল আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান। সেই মোতাবেক আজ সকাল থেকে পুরুলিয়া-চান্ডিল শাখার কাঁটাডি রেল স্টেশনে ১২ ঘণ্টার জন্য রেল অবরোধ শুরু করেছে তারা।