গ্রেফতার অসমের লেখক শিখা শর্মা। মাওবাদী হামলায় নিহত জওয়ানদের নিয়ে নেটমাধ্যমে বিতর্কিত পোস্ট করার অপরাধে অসমের লেখক শিখা শর্মার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা জারি করা হল। দেশদ্রোহ আইনে মঙ্গলবারই গুয়াহাটি থেকে লেখক শিখাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে। ডিব্রুগড়ে অল ইন্ডিয়া রেডিয়োতে কর্মরত শিখা শর্মা বরাবরই নেটমাধ্যমে সক্রিয় অর্থাৎ তিনি নেটমাধ্যমে বরাবরই নিজের মত প্রকাশ করেন । সম্প্রতি ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী হামলা নিয়েও ফেসবুকে সরব হন তিনি। তাতে তিনি নিহত জওয়ানদের ‘শহিদ’ তকমা দেওয়া নিয়ে আপত্তি তোলেন। শিখা লেখেন, ‘‘বেতনভুক চাকরিজীবী কেউ কর্তব্যরত অবস্থা মারা গেলেই তাঁকে শহিদ বলা চলে না। তাই যদি হয়, সে ক্ষেত্রে তো বিদ্যুৎ বিভাগে কর্মরত কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেলেও তাঁকে শহিদ বলা উচিত। সংবাদমাধ্যমগুলিকে বলি, মানুষের মনে আবেগ তৈরি করবেন না’।
শিখার এই আপত্তিকর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হতে একটুও সময় লাগেনি। তাঁকে আক্রমণ করে রীতিমতো সেই পোস্টেই মন্তব্য করতে থাকেন নেটাগরিকরা। বিষয়টি নজরে আসে গৌহাটি হাইকোর্টের দুই আইনজীবী উমি ডেকা বরুয়া এবং কঙ্কনা গোস্বামীর । তারাই লেখক শিখার বিরুদ্ধে দিসপুর থানায় এফআইআর দায়ের করেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এই ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য করে জওয়ানদের আত্মবলিদানকে কলুষিত করেছেন লেখক শিখা। সোমবার এফআইআর দায়ের হয় শিখার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার শিখাকে গ্রেফতার করে গৌহাটি থানার পুলিশ। দিসপুর থানার ওসি প্রফুল্ল কুমার বলেন, ‘‘এফআইআরের ভিত্তিতেই শিখাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ গুয়াহাটির পুলিশ কমিশনার মুন্না প্রসাদ গুপ্ত বলেন, ‘‘১২৪-এ (দেশদ্রোহ)-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে শিখার বিরুদ্ধে।’’ তাদের দাবি এই প্রথম জনরোষে মুখে পড়লেন না শিখা। সরকারের বিরুদ্ধেও মুখ খোলায় গত বছর অক্টোবরে নেটমাধ্যমে তিনি ধর্ষণের হুমকি পান। তা নিয়ে শিখা মামলা দায়ের করলেও, সেই সময় পুলিশ কোনও পদক্ষেপই করেনি বলে নেটমাধ্যমে অভিযোগ করেছিলেন শিখা। কুরুচিকর মন্তব্যের ফলস্বরূপ শিখার বিরুদ্ধে কি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা বৃহস্পতিবার আদালত মারফৎ জানা যাবে।