পড়ুয়াদের মধ্য থেকে উপাচার্য পেতে চলেছে এ রাজ্য। যা দেশে প্রথম। কালিম্পং কলেজে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে এমনই দাবি করে বসেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তাঁর কথায়, “এ বার বাংলা এক জন পড়ুয়া-উপাচার্য পাবে। উজ্জ্বল এবং সেরা পড়ুয়া। তিনি হয়তো গবেষণা করছেন। তবে অতি সত্বর উপাচার্য হবেন। যা ভারতে প্রথম।” রাজভবনের তরফ থেকে পরে দাবি করা হয়, সেই সব উজ্জ্বল পডুয়া যাঁরা স্নাতকোত্তরে খুব ভাল করেছেন, পড়াশোনা এবং গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের মধ্য থেকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য করা হতে পারে। যদিও ‘পড়ুয়া-উপাচার্য’ এবং পড়ুয়াদের মধ্য থেকে ‘অন্তর্বর্তী উপাচার্য’ বলতে ঠিক কী বোঝাতে চাওয়া হয়েছে, তা নিয়ে ধন্দে শিক্ষা জগতের অনেকে। বেধেছে বিতর্কও।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “কে, কোথায়, কী বলেছেন সে সম্পর্কে আমার কাছে এখনও নির্দিষ্ট খবর নেই। তবে পড়ুয়াদের উপাচার্য করার ভাবনা প্রসঙ্গে এটুকুই বলার যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন উপাচার্য পদে নিয়োগের মাপকাঠি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। তাতে বলা আছে, যিনি উপাচার্য হবেন, তাঁর অন্তত দশ বছর অধ্যাপক পদে পড়ানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। যিনি দশ বছর অধ্যাপক পদে থাকবেন, তাঁর সামগ্রিক পড়ানোর অভিজ্ঞতা প্রায় কুড়ি বছরে গিয়ে দাঁড়াবে। আর তিনিই হতে পারবেন উপাচার্য।”

অন্যদিকে, রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্যপালের পরিকল্পনা সম্পর্কে বলতে পারব না। তবে এ রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার যে হাল হয়েছে, শাসক দলের তাঁবেদার লোকজনকে যে ভাবে উপাচার্যের পদে বসানো হয়েছে, তার চেয়ে এই পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা ভাল বলে মনে হয়।” উত্তরবঙ্গের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন উপাচার্য বলেন, “ছাত্র হিসাবে সেরা হলেও, যাঁরা পড়ুয়া তাঁদের কী করে উপাচার্য করা যাবে? এমন কথার মানে বুঝতে পারছি না!”
উল্লেখ্য, ‘পড়ুয়া-উপাচার্য’ প্রসঙ্গ টানার আগে এ দিন শিক্ষা ক্ষেত্রকে দুর্নীতিমুক্ত এবং সমাজকে হিংসামুক্ত করার বার্তা দেন রাজ্যপাল। পড়ুয়ারা দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষাক্ষেত্র আর হিংসামুক্ত সমাজ চান কি না, তা জানতে চান। সবাই হ্যাঁ বলার পরে, তিনি বলেন, “সম্প্রতি উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক করেছি। তাতে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের অন্যতম দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন তৈরি করা। একই সঙ্গে দরকার হিংসামুক্ত সমাজ। এ বিষয়ে তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্ব নিতে হবে।” বাংলা সেরা ‘এডুকেশনাল হাব’ হয়ে উঠবে, বাংলার পড়ুয়ারা বিশ্বসেরা হবেন এবং বাংলার বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বে সেরা হয়ে উঠবে। এ দিনও এই ভাবনার কথা মনে করিয়ে দেন সিভি আনন্দ বোস।
