রাজ্যে ইতিমধ্যেই চার দফা ভোট সম্পন্ন হয়েছে| ঘটে চলেছে নানারকম বিপত্তি, কুৎসা পাল্টা কুৎসা মন্তব্য চালাচ্ছে একে অপরের প্রতি|সোমবার রাত ৮টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার করতে পারবেন না মুখ্যমন্ত্রী, এমনই নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন। বলা হয়েছে, প্ররোচনামূলক বক্তৃতার অভিযোগে মমতাকে পাঠানো নোটিসের জবাবে কমিশন সন্তুষ্ট না হওয়াতেই ২৪ ঘণ্টার এই নিষেধাজ্ঞা। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘মানুষ এর জবাব দেবে। পক্ষপাতদুষ্ট কমিশন বিজেপি-র শাখা সংগঠন। ভোটের বাক্সে এর জবাব দেবে মানুষ।’’ দলের আর এক মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘এটা গণতন্ত্রের পক্ষে কালো দিন।’’
৩ এপ্রিল মমতা তারকেশ্বরের সভা থেকে আব্বাস সিদ্দিকির নাম না করে মন্তব্য করেন। তার পরেই উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হতে দেবেন না। বিজেপি এলে মনে রাখবেন সমূহ বিপদ, সবচেয়ে বেশি আপনাদের।’’ কমিশনের আচরণবিধির পরিপন্থী-যুক্তি, ধর্ম বা জাতপাতের ভিত্তিতে ভোট চাওয়া। শুধু আব্বাস সিদ্দিকী নয় কোচবিহারের জনসভা থেকেও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেত্রী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘নির্দেশে’ই সিআরপিএফ-এর একাংশ বিজেপি-র হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘সিআরপিএফ যদি গন্ডগোল করে, মেয়েদের একটা দল মিলে ওদের ঘেরাও করে রাখবেন। আর একটা দল ভোট দিতে যাবেন। শুধু ঘেরাও করে রাখলে ভোট দেওয়া হবে না। তাই ভোট নষ্ট করবেন না। ৫ জন ঘেরাও করবেন। ৫ জন ভোট দেবেন।’’
কেন্দ্রীয় বাহিনীকে এহেন মন্তব্য করার জন্যই মমতাকে নোটিস পাঠানো হয়। শনিবার কমিশনে পাঠানো জবাবে তৃণমূলনেত্রী লিখেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিআরপিএফ)-র প্রতি আমার সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে। দেশের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তায় তাদের অবদান খুব উঁচুতে’। এর ফলে মুখ্যমন্ত্রীর মঙ্গলবারের কর্মসূচি বাতিল হল। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে মঙ্গলবার বারাসত, বিধাননগর, হরিণঘাটা ও কৃষ্ণগঞ্জে মমতার সভা করার কথা ছিল।শনিবার কোচবিহারের শীতলখুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যুর পরে রবিবার সেখানে যাবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন মমতা।
সেই ঘোষণার পরেই কমিশন ৭২ ঘণ্টার জন্য যে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের শীতলখুচিতে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। প্রসঙ্গত এর আগে মমতাকে দু’টি নোটিশ পাঠিয়েছিল কমিশন। হুগলির তারকেশ্বরে গত ৩ এপ্রিল মমতা বিধিভাঙা মন্তব্য করেছেন বলে কমিশন একটি চিঠিতে জানিয়েছিল। এর পরে একটি জনসভা থেকে ‘‘আমাকে ১০ বার শো-কজ করেও লাভ নেই। একই জবাব দেব।’’ কমিশনের অভিযোগ প্রসঙ্গে পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে মুসলিমদের যাঁরা পাকিস্তানি বলেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ক’টা অভিযোগ হয়েছে? খালি তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ?’’ কমিশন সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ এবং ৭ এপ্রিল প্রচার সভা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে মন্তব্যের জেরেও নোটিস পাঠানো হয় এবং ২৪ ঘন্টা প্রচার বন্ধ করা হয়|