কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকে দেশজুড়ে চলছে সাধারণ ধর্মঘট। কেন্দ্রের শ্রমিক-সহ বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং সাত দফা দাবি-সহ দেশজুড়ে ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট করা হচ্ছে। ভারতীয় মজদুর সংঘ ছাড়া ১০ টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন সেই ধর্মঘটে সামিল হয়েছে। ধর্মঘটের সমর্থনে কোথাও অবরোধ করা হয় ট্রেন তো কোথাও জাতীয় সড়ক। কলকাতার ধর্মতলা সহ একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ দেখায় তারা। শহরের পাশাপাশি কোচবিহার, ব্যারাকপুর, সিউড়ি, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুরে বিক্ষোভ দেখায় বাম ও কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনগুলি। ধর্মঘটের সমর্থনে ধর্মতলায় পথ অবরোধ করে বামেরা। পোড়ানো হয় কুশপুতুল।
এদিন সকালে যাদবপুর এইট-বি বাসস্ট্যান্ড থেকে সুলেখা পর্যন্ত মিছিল করা হয়। আপাতত কোনও অবরোধ করা হয়নি। বাসস্ট্যান্ডেও স্বাভাবিকভাবে বাস চলাচল করছে। যাত্রীরাও যাতায়াত করছেন। তাঁদের আপাতত আটকানো হয়নি। কোচবিহারে টায়ার চালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। রাস্তা অবরোধের পাশাপাশি বাস লক্ষ্য করে ছোড়া হয় পাথর। রানিগঞ্জেও সকাল থেকেই ধর্মঘটের সমর্থনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। দুর্গাপুর স্টেশন বাজার চত্বরে পথ অবরোধ করা হয়। বাঁকুড়ার সিমলাপালে বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকলেও সবজি বাজার সম্পূর্ণ ভাবে খোলা ছিল সকাল থেকেই।বেসরকারি ও সরকারি যানবাহনের দেখা মেলেনি। এককথায় বনধের মিশ্র প্রভাব সিমলাপালে। বারাকপুরেও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডেও বিক্ষোভ দেখায় বনধ সমর্থকরা। তবে হাওড়া স্টেশন চত্বরে আপাতত স্বাভাবিক বাস চলাচল। বরং অন্যদিনের তুলনায় বেশি সরকারি বাস। তৎপর রয়েছে পুলিশও।
এদিকে, ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় লোকাল ট্রেন পরিষেবায়। মেন লাইনেও আটকানো হয়েছে ট্রেন। মধ্যমগ্রামে আপ-ডাউন লাইনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। শুধু তাই নয়, বনগাঁ লোকাল লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। ইচ্ছাপুরে ট্রেন আটকে দেয় বাম কর্মী-সমর্থকরা। ডায়মন্ড হারবার লাইনের একাধিক জায়গায় ওভারহেড তারে কলাগাছ ফেলে দেয় বনধ সমর্থকরা। সুভাষগ্রামে আটকানো হয় ট্রেন। ক্যানিংয়ে ট্রেনের সামনে উঠে বিক্ষোভ দেখায় কর্মী-সমর্থকরা।
ধর্মঘটের ইস্যুগুলির সমর্থন জানালেও ধর্মঘটের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। অন্যান্যবারের মতো সরকারি কর্মচারীদের উপস্থিতি নিয়ে কড়া নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার। বিজেপি অবশ্য ধর্মঘটের বিরোধিতা করছে। শ্রমিক সংগঠনগুলির পাশাপাশি ধর্মঘট ডেকেছে ‘অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িস অ্যাসোসিয়েশন’। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক ছাড়া অধিকাংশ ব্যাঙ্কের কর্মী-অফিসাররা। এদিকে, ধর্মঘটের ফলে দেশজুড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির পরিষেবা ও এটিএম পরিষেবাও ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।