রাজ্যে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর , আজ নবান্নে করোনা মোকাবেলা নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। সমস্ত হাসপাতাল গুলির ওপর নির্দেশনা জারি করা হয় যে আগামী দিনগুলিতে জরুরী ভিত্তিতে যে সমস্ত রোগীরা হাসপাতালে আসবেন ,সবার আগে তাঁদের চিকিৎসা করতে হব ।
রাজ্যের টিকাকরণ সম্বন্ধে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কেন্দ্রের কাছে ৩ কোটি ভ্যাকসিনের জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল । এদিকে রাজ্যের তরফ থেকে ইতি মধ্যেই দেড় কোটি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষকে। তবে কেন্দ্রের তরফ থেকে যে পরিমাণ ভ্যাকসিন পাঠানো হচ্ছে তা নিতান্তই সামান্য। তাই সাধারণ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে পুনর্বিবেচনা করতে হল রাজ্য সরকারকে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে আগামী দিনগুলিতে প্রথমে তাঁদেরকেই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে যাঁদের একটি ডোজ ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়ে গিয়েছে ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য আরও তিন শ্রেণীর মানুষকে গুরুত্বপূর্ণভাবে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলেন তিনি যথা- হকার, পরিবহন যাত্রা সম্পর্কিত কর্মী এবং সাংবাদিক । মূলত যে সমস্ত মানুষেরা সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে বেশি পরিমাণে আসেন তাঁদেরকেই আগে টিকাকরণ করাতে হবে, বলে মনে করছেন তিনি । ওদিকে তিনি করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সাধারন মানুষকে আরও একবার সচেতন করে ,তিনি বলেন ,”অনুগ্রহ করে প্রত্যেকেই মাস্ক ব্যবহার করবেন এবং বাজারে গেলে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখবেন” ,পাশাপাশি সমস্ত কোভিড বিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানান সমস্ত মানুষকে। তিনি আরও বলেন রাজ্যে যে কোনো রকমের আনুষ্ঠানিক পরিবেশে জনসমাগম করা যাবেনা। সর্বোচ্চ ৫০ জন ব্যক্তিকে নিয়ে করতে হবে । যে কোন অনুষ্ঠানের জন্য আগাম অনুমতি নিতে হবে।
রাজ্যের বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতে শপিং মল, জিম ,সিনেমা হল এবং অন্যান্য জমায়েতে জায়গাগুলিকে সামগ্রিকভাবে বন্ধ রাখা হচ্ছে। শুধু তাই নয় পাশাপাশি রাজ্যের সমস্ত পরিবহন মাধ্যমেও ৫০% হ্রাস ঘটানো হচ্ছে, এমনকি আগামী দিন থেকে কলকাতা মহানগরীতে অন্যদিনের তুলনায় কম মেট্রো চলাচলের কথা জানানো হয়েছে। আমি কাল থেকে রাজ্যের সমস্ত লোকাল ট্রেন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হল। পাশাপাশি অন্য কোন রাজ্য থেকে পশ্চিমবঙ্গে এলে rt-pcr নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতেই হবে । শুধু তাই নয় পাশাপাশি সরকারি এবং বেসরকারি দপ্তরের কর্মচারীদের জন্য ৫০% ওয়ার্ক ফ্রম হোম সার্ভিস চালু করা হল । হোম ডেলিভারি সার্ভিস এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্য সরবরাহের মাধ্যমগুলিকে আরও বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়েছে। প্রত্যেকটি ব্যাংক সকাল ১০ টা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত খোলা থাকবে। তাছাড়া বিভিন্ন কোম্পানি গুলি ৫০% সময় বন্ধ রাখতে হবে। সাধারণ মানুষের কাছে নিজের এই সিদ্ধান্তের জন্য আগাম ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন তিনি।