রাজ্যের সব মেডিকেল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতিতে এখন থেকে আর কোনও দলীয় নেতা থাকবেন না। এখন থেকে অধ্যক্ষ বা সুপাররাই হবেন ওই রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। এছাড়া ওই সমিতিতে থাকবেন একজন জুনিয়র ডক্তার, একজন সিনিয়র ডাক্তার, কজন নার্স এবং একজন জনগণের প্রতিনিধি। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মেডিকেল কলেজ, সুপারস্পেশালিটি সেন্টার, জেলা হাসপাতালের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকের পরে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা জোর দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী। হাসপাতালগুলির সিকিউরিটি অডিটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে। হাসপাতালগুলিব প্রতিটি বিল্ডিং এবং ফ্লোরে অ্যলার্মিং অ্যাপ চালু করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে এদিনের বৈঠকে। হাসপাতালের কর্মচারী, ডাক্তার, নার্সই শুধু নয়, এখন থেকে হাসপাতালের সাফাইকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী, এমনকী কোনও হাসপাতালে নির্মাণকাজ চলতে থাকলে নির্মাণকর্মীদের জন্যও ছবিসহ বায়োমেট্রিক কার্ড চালু করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালগুলির নিরাপত্তায় জোর দিতে ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্প রূপায়ণের জন্য যে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, তা কীভাবে কাজে লাগানো হবে, তা নিয়ে এদিনের বৈঠকে বিস্তারিত এবং ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। হাসপাতালগুলিতে রেস্ট রুম, অতিরিক্ত টয়লেট তৈরি, পানীয় জলের ব্যবস্থা, সিসিটিভি বসানোর দায়িত্ব পূর্ত দফতরের হাতে না রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই নিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, জেলায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি। মমতা বলেন, বন্যার মধ্যে বুধবারও ডিভিসি ২৫ হাজার কিউসেক জল ছেড়ে দিয়েছে। বন্যা পরিস্থিতিতে পূর্ত দফতরের হাতে অনেক কাজ। এর মধ্যে দ্রুত গতিতে হাসপাতালের সুরক্ষা সংক্রান্ত কাজে দ্রুত গতিতে শেষ করত যা যা প্রয়োজন, তা করুন। এদিনের বৈঠকে ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু নিয়ে পরিসংখ্যান নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবারে ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেকটা কম বলে মন্তব্য করেন মমতা। তবে বন্যা পরিস্থিতিতে সাপের উপদ্রব বাড়তে পারে। রাজ্যের প্রতিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অ্যান্টি ভেনাম ইনজেকশন, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখার নির্দেশ দেন।
সম্প্রতি নদিয়ার রানাঘাটে ১১২ ফুট দুর্গা প্রতিমা তৈরি নিয়ে বিতর্ক গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার বলেন, ১১২ ফুট প্রতিমা দর্শন করতে গিয়ে কেই পদপিষ্ট হলে, তার দায়িত্ব কে নেবে? শুধু পুজো করলেই হবে না, দায়িত্বশীলও হতে হবে। এমন কিছু করবনে না, যাতে মানুষ পদপিষ্ট হয়ে মারা যায়। এই প্রসঙ্গে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার বিষয়টিকেও কটাক্ষ করেন মমতা। নাম না সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে আক্রমণ করে বলেন, কোর্টে গিয়ে সারাক্ষণ রাজনীতির কচকচানি কেন? আদালতে যাওয়া যেতেই পারে। কিন্তু বিচারের রায় যেন এমন না হয়, যাতে মানুষ বিপদে পড়ে। বিকাশ ভট্টাচার্য মেয়র থাকাকালীন কেন শহরে জল জমত, সেই প্রশ্নও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।