প্রকৃতির সঙ্গে সংগ্রাম করে, বেঁচে থাকা বোধহয় একেই বলে । লাগাতার চারদিন দিকভ্রান্ত নাবিকের মত সমুদ্রের বুকে ভাঙ্গা ইয়ার্ডের অংশের ওপরে দুই সন্তানকে নিয়ে ভেসেছিলেন ভেনিজুয়েলার মেরিলি চেকন এবং তাঁর স্বামী। ক্রমেই শরীর অবসন্ন হয়ে আসছিল সকলের । মাথার উপর প্রখর সূর্যতাপ ,অথচ কাছে নেই এক বোতল জল। দুই সন্তানকে কিভাবে বাঁচিয়ে রাখবেন এই চিন্তায় করছিলেন মেরিলি। অবশেষে নিজের শরীরকে ডিহাইড্রেড হওয়া থেকে বাঁচাতে নিজের প্রস্রাব পান করেন তিনি । তবে শিশুদের বাঁচানোর জন্য নিরন্তর স্তন পান করিয়ে গিয়েছেন তিনদিন ধরে। চতুর্থ দিন আর প্রকৃতির এই কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উঠতে পারেননি তিনি । দুই সন্তানকে বাঁচিয়ে রেখে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। জানা যায় চতুর্থদিন উদ্ধারকারীরা আসার আগেই মারা যান মেরিলি। মায়ের দেহটিকে দুই হাতে আঁকড়ে ধরে বসে ছিল দুই সন্তান। অবশেষে উদ্ধার কার্য বাহিনীঁর তৎপরতায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত ৩ সেপ্টেম্বর ভেনেজুয়েলার থেকে ক্যারিবীয় দ্বীপ লা তোর্তুগাতে বেড়াতে গিয়েছিলেন মেরিলি এবং তার পরিবার । থর দ্য হিগুরেতে, নামক একটি ওয়ার্ড ভাড়া করেন তারা। জানা যায় জনমানবহীন দ্বীপের রোমাঞ্চ উপভোগ করতে গিয়েছিলেন তারা। তবে ৫ সেপ্টেম্বরে সেখান থেকে ফিরে আসার কথা ছিল তাদের । কিন্তু রাত্রি এগারোটা বেজে গেলেও ফেরেননি তারা। তখনই সন্দেহের বশে ভেনেজুয়েলা ন্যাশনাল মেরিটাইম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় ওই সংস্থার তরফে। অবশেষে কর্তৃপক্ষের তরফে তদন্তে নেমে খুঁজে পাওয়া যায় ইয়াটের ভাঙ্গা অংশ ।অবশেষে ৭ সেপ্টেম্বর সকালে উদ্ধার করা হয় তাদের । জানা যাচ্ছে মেয়েদের উদ্ধার করা সম্ভব হলেও, পরিবারের বাকি সদস্যরা ইতিমধ্যেই নিখোঁজ। সব মিলিয়ে মোট ৯জন গিয়েছিলেন এই রোমাঞ্চকর পরিবেশকে উপভোগ করতে। তবে ফিরে পাওয়া গেছে শুধু চারজনকেই । তার মধ্যে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে মেরিলির।