নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান: বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক হিংসা কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত গোটা রাজ্য। হিংসা-বিদ্বেষের আগুন জ্বলছে জেলায় জেলায়। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তর আলোচনা দেশ জুড়ে। এরই মাঝে বর্ধমানে উঠে এলো এক অভূতপূর্ব সম্প্রীতির ছবি। করোনা আতঙ্কে বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ সৎকারে কেউ এগিয়ে না আসায় স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরাই সৎকার করলেন সেই দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমানের কেতুগ্রামের আনখোনা পঞ্চায়েতের চাকটা গ্রামে। সূত্রের খবর শুক্রবার দুপুর ১ টা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান চাকটা গ্রামের বাসিন্দা অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই গ্রামের বিজেপির বুথ সভাপতি ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পরে গোটা এলাকায় গুজব ছড়ায় যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই বিজেপি নেতার। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। এই করোনা আতঙ্ক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর মৃতদেহ সৎকার এগিয়ে আসেননি কেউই। এমনকি হাত গুটিয়ে নেন স্থানীয় বিজেপির নেতারাও।
শুক্রবার সারাদিন এই আতঙ্ক এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে সৎকার করা হয়নি অনুপ বাবুর দেহ। শনিবার সকালে আনখোনা পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী বুদুন সেখ ঘটনার কথা জেনে নির্দেশ দেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের এগিয়ে এসে ওই বিজেপি নেতার দেহ সৎকারের জন্য। তাঁরাই কাঁধে করে মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়ে সৎকার সারেন।
মৃত বিজেপি নেতার স্ত্রী জানান, “দীর্ঘদিন ধরে আমার স্বামী অসুস্থ ছিলেন। সেই কারণেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। আমার স্বামীর করোনা হয়নি। তবুও কেউ আমার স্বামীর মৃতদেহ সৎকার এগিয়ে আসেনি। বিজেপির লোকজনকে জানানো হলেও তাঁরা আসেননি। শেষে তৃণমূলের ছেলেরাই সব কাজ সম্পন্ন করল।” এই ঘটনায় বিজেপির অবশ্য দাবি অন্যরকম। স্থানীয় নেতৃত্ব জানান ” এলাকায় দলের কর্মীরা ঘরছাড়া, তাই কেউ আসতে পারেননি।” যদিও কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজ বলেন, “আমরা আমাদের দলের কর্মীদের এই শিক্ষাই দিয়ে থাকি। তৃণমূল কর্মীরা যে কতটা মানবিক, এর থেকেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়।”