শিশু মৃত্যুতে রণক্ষেত্র তিলজলা। চলল ভাঙচুর, রোষের মুখে পুলিশের গাড়ি। ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হল পুলিশের গাড়িতে। পরপর বাইকে আগুন লাগিয়ে দেন উন্মত্ত জনতা। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে পাথর বৃষ্টি। অশান্ত হয়ে ওঠে বন্ডেল গেট, পিকনিক গার্ডেন। পাল্টা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটানো হয়। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ। কাঁদানে গ্যাস এবং লাঠি হাতে রাস্তায় নামানো হয় র্যাফ।
তিলজলা শিশু খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত অলোক কুমারকে। সূত্রের খবর, পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত জানায়, সন্তান লাভের আশায় বিহারের এক তান্ত্রিকের কথা শুনে ওই ৭ বছরের শিশুকে খুন করেন নিঃসন্তান অলোক। অভিযুক্ত তান্ত্রিককে ধরতেও বিহারে কলকাতা পুলিশের একটি দল পাঠানো হতে পারে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশের অনুমান, শিশুটিকে খুন করার পর তার দেহ হাত পা বেঁধে বস্তার ভিতর ফেলে রাখা হয়েছিল। মৃতের পরিবারের সদস্যেরা জানিয়েছেন, রবিবার সকালে শিশুটিকে আবর্জনা ফেলার জন্য আবাসনের নীচে পাঠানো হয়েছিল। অনুমান, তখনই তাকে ঘরে নিয়ে যান দোতলার ফ্ল্যাটের বাসিন্দা অলোক। তার পর ঘরের ভিতর তাঁর উপর নির্যাতন চালানো হয়।
ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকালে বন্ডেলে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখান তিলজলার স্থানীয় বাসিন্দারা।পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। রবিবার রাতেও স্থানীয়রা তিলজলা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। অভিযোগ, রবিবার সকাল থেকে শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে থানায় অভিযোগ জানালেও পুলিশ সঠিক পদক্ষেপ করেনি। রবিবার রাতে তিলজলা থানা লক্ষ্য করে ভাঙচুর চালান উত্তেজিত জনতা। সোমবার সকাল থেকেই দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ। বন্দেল গেটে বিক্ষোভের পর রেল অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তিলজলার বাসিন্দারা। যার ফলে বন্ধ হয়ে যায় শিয়ালদহের দক্ষিণ শাখার রেল চলাচল। অবরোধের জেরে আটকে পড়ে প্রায় ২০টি ট্রেন। পুলিশি তৎপরতায় সরানো হয় বালিগঞ্জের কাছে রেল লাইনে অবরোধ করা বিক্ষোভকারীদেরও। বন্ডেল গেট এবং পিকনিক গার্ডেন এলাকাও ফাঁকা করা হয়।
তবে এখনও পরিস্থিতি উত্তপ্তই রয়েছে মৃত শিশুর বাড়ির সামনের এলাকা। সেখানে এখনও চাপা উত্তেজনা রয়েছে। বিকাল ৪টে ১৫ নাগাদ রেললাইন থেকে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ । কলকাতা পুলিশ নেমে আসে রেললাইনে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে দীর্ঘক্ষণ ধরে তিলজলা, বন্ডেল গেট, পিকনিক গার্ডেন এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেল। প্রাণ হাতে করে ছুটলেন পথচারীরা। প্রকাশ্যে জ্বালিয়ে দেওয়া হল পুলিশের গাড়ি। তারপরেও কেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এতটা দেরি করল পুলিশ?