জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল। এই অবস্থায় সেই অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে জেলা সফরে যাছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর আগমনের কারণে বোলপুর জুড়ে সাজো-সাজো রব। পোস্টার, ফ্লেক্স দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা বোলপুর। এখানেই টুইস্ট। পোস্টার, ফ্লেক্সে কোথাও নেই অনুব্রত ছবি। শুধুই তৃণমূল সুপ্রিম ও দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি রয়েছে। যা নিয়েই জোর চর্চা চলছে জেলায়।
এর আগে মমতা বীরভূম সফরে যত বারই এসেছেন, প্রত্যেক বারই পাশে পেয়েছেন দলের জেলা সভাপতি তথা তাঁর স্নেহধন্য ‘কেষ্ট’-কে। কখনও জনসভা, কখনও প্রশাসনিক বৈঠক। সবেতেই দলনেত্রীর পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে অনুব্রতকে। শেষবার তিনি বীরভূম গিয়েছিলেন বগটুই কাণ্ডের পর। সেই সময়ও তাঁর সঙ্গী ছিলেন অনুব্রত।

দলের একাংশের অবশ্য দাবি, অনুব্রতর ‘প্রভাবশালী’ তকমা সরাতেই এমন কৌশল নেওয়া হয়েছে। তবে বিরোধীরা বলছেন, দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি বজায় রাখতে অনুব্রত মণ্ডলকে ছেঁটে ফেলার এটি নয়া কৌশল। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “পার্থকে ছাঁটতে সাত দিন নিয়েছিল। কেষ্টকে ছাঁটতে সাত মাস লাগল? একজনের কাছে ৫৫০ কোটি আর একজনের কাছে ৩৫০ কোটি। আসলে যে যত বেশি টাকা তুলতে তৃণমূলে তার তত বেশি গুরুত্ব। এখন বাঘ খাঁচায় বন্দি। খেঁকশিয়ালদের জেলে ভরা হচ্ছে। আরও অনেক ক্লু পাওয়া যাবে। দুর্নীতি সামনে আসবেই।” অন্যদিকে,দলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার দিলীপ ঘোষকে শুধুমাত্র নিজের দল নিয়ে ভাবনাচিন্তা করার পরামর্শ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠক সেরে বিধাননগরে আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। বইমেলার উদ্বোধন করেই বিধাননগর থেকে হেলিকপ্টারে বোলপুরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা মমতার। হেলিকপ্টারে চড়ে সরকারডাঙ্গা হেলিপ্যাড পৌঁছবেন তিনি। দলীয় সূত্রে খবর, এদিন রাঙ্গাবিতানে ৭০ জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে বৈঠক করার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। রাতে শান্তিনিকেতনেই রাত্রিবাস করার কথা তাঁর। পরের দিন সকালে বোলপুর থেকে হেলিকপ্টারে রওনা দেবেন মালদহের উদ্দেশে। সেখানে এক সরকারি কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার কথা তাঁর। দুয়ারে সরকার কর্মসূচির বিভিন্ন পরিষেবা মুখ্যমন্ত্রী তুলে দেবেন সাধারণ মানুষের হাতে।
পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল দেওয়ার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। এরই সঙ্গে মালদহ জেলার একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করার কথা মমতার। কর্মসূচি শেষে আবারও হেলিকপ্টারে করে বোলপুর ফিরে যাবেন তিনি। সেখানেই রাত্রিবাস করবেন মমতা। বুধবার বোলপুরের জেলা পরিষদের ডাক বাংলো মাঠে সরকারি কর্মসূচিতে সেরে ফের বোলপুর ফেরার কথা মমতার।বৃহস্পতিবার, বর্ধমান যাবেন তিনি, সেখানে সরকারি কর্মসূচিতে যোগদান করে হেলিকপ্টারেই কলকাতায় ফিরে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।