ইডি হেফাজতে রয়েছেন যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। কুন্তলকে যে রায় প্রতিদিনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে ইডির হাতে। ইডি সূত্রে খবর, প্রশ্নপত্রের খসড়া জেনে চাকরিপ্রার্থীদের আগাম জানিয়ে দিতেন ধৃত যুব নেতা কুন্তল ঘোষ। তার জন্য কুন্তল আগাম টাকাও নিতেন চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে। আর কুন্তলের এই কর্মকাণ্ড জানতেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থর সঙ্গে কুন্তলের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের একাংশ থেকেও মিলেছে সেসব তথ্য। তথ্যগুলি খতিয়ে দেখছেন ইডি আধিকারিকরা।
কুন্তল ঘোষকে জেরার মুখে বারবার তাঁর মুখে উঠে এসেছে চিটফান্ড কর্তা গোপাল দলপতির নাম। গোপালের কথা ইডিকে জানিয়েছেন তাপস মণ্ডলও। কুন্তল ও তাপসের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা তোলার ঘটনায় মূল লিঙ্ক গোপাল দলপতিই। চাকরিপ্রার্থীদের কয়েক কোটি টাকা তুলেছেন গোপাল দলপতি। সেই বিপুল কালো টাকা সাদা করতে চিটফান্ড ও একাধিক বেসরকারি সংস্থায় লগ্নি করে গোপাল। এখন গোপাল চিটফান্ড মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিহার জেলে রয়েছেন। সূত্রের খবর, ইডি আদালতের অনুমতি নিয়ে গোপাল দলপতিকে জেলে গিয়ে জেরা ও প্রয়োজনে নিজেদের হেফাজতে নিতে পারে।
অন্যদিকে, কুন্তলের বাড়ি থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার করেছে ইডি। তদন্তকারীদের দাবি, গত বিধানসভা নির্বাচনে হুগলির এক মহিলা প্রার্থীর প্রচারে কয়েক কোটি টাকা খরচ করেছিলেন কুন্তল। ভোটের প্রচারেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ইডি সূত্রে দাবি, ভোটে টাকা ঢালার কথা জেরায় স্বীকার করেছেন কুন্তল। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে পাওয়া টাকা ওই খাতে খরচ হয়েছে বলে ইডির সন্দেহ। শুধু নিজের জেলার ওই মহিলা প্রার্থীর প্রচারেই নয়, কুন্তলের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য অনুযায়ী ভিন রাজ্যের নির্বাচনী প্রচারেও তিনি টাকা ঢেলেছিলেন। তদন্তকারীদের সন্দেহ সেই টাকাও নিয়োগ দুর্নীতিতে তোলা টাকা থেকেই খরচ হয়েছিল। এই বিষয়ে কুন্তলকে জেরাও করছে তদন্তকারীরা।
এদিকে, শুক্রবারও কুন্তলের ঘনিষ্ঠ হুগলির যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করে ইডি। এই নিয়ে পরপর তিনদিন ধরে শান্তনুকে জেরা করা হল। শুক্রবার সাত ঘন্টা জেরা শেষে বেরিয়ে যান শান্তনু। তবে হুগলির যুব তৃণমূল নেতা, যে সমস্ত নথি দিয়েছেন, তাতে সন্তুষ্ট নয় ইডি আধিকারিকরা। ইডির তরফে নতুন করে পূর্ণাঙ্গ নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে সেই সমস্ত নথিপত্র জমা করতে হবে,ইডির কাছে। শুধু তাই নয়, তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তিনশো চাকরি প্রার্থীর তালিকার পাশাপাশি বেশ কিছু অ্যাডমিট কার্ডও উদ্ধার করা হয়েছে বলেও ইডি সূত্রে খবর।