সবে চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে ভারত। বুধবার ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা বেজে ৪ মিনিটে ‘চন্দ্রযান-৩’ অবতরণ করেছে চাঁদের মাটিতে। আর চন্দ্রযান অবতরণের এই ভিডিও ‘ইসরো’র তরফে লাইভ সম্প্রচার করা হয় গোটা ভারতবাসীর জন্য। ঠিক শেষ এক কিলোমিটারে ‘ইসরো’র সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যিনি এখন রয়েছেন আফ্রিকায়। প্রথম দিকে বাকি ভারতবাসীর মতই তাঁর মুখেও দেখা যাচ্ছিল উদ্বেগ। কিন্তু শেষ মুহূর্তে হাসি ফোটে। ‘বিক্রম’ চাঁদের মাটি ছুঁতেই হাততালি দিয়ে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর তাঁকে দেখা যায় ভারতের পতাকা দোলাতে। এসবের মধ্যেই চাঁদে ‘ট্যুর’ অর্থাৎ পর্যটনের ভবিষ্যদ্বাণী করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘চন্দ্রযান-৩’এর সাফল্যের জন্য বিজ্ঞানীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মোদী বললেন, ‘আমার বিশ্বাস আমাদের আগামী প্রজন্ম চাঁদে পর্যটনের স্বপ্ন দেখবে। দূরের চাঁদমামা ‘ট্যুরে’র চাঁদমামা হবে’।
‘চন্দ্রযান-৩’এর সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী এবং ১৪০ কোটি ভারতবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মোদী বলেন, “আমরা ভারতে পৃথিবীকে ‘মা’ বলি আর চাঁদকে বলি ‘মামা’। ভারতের শিশুদের মায়েরা এত দিন বলে এসেছেন, ‘চন্দামামা দূর কি হ্যায়’। আমার বিশ্বাস খুব শিগগিরই ভারতের আগামী প্রজন্মের শিশুরা বলবে চন্দামামা ট্যুর কি হ্যায়”। তিনি আরও বলেন, “আজকের দিনটা ভারতকে আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে গেল ঠিকই। তবে হার থেকে শিক্ষা নিয়ে কিভাবে জয়ী হওয়া যায় তার প্রমাণও দিল এই অভিযান।”
উল্লেখ্য, ‘চন্দ্রযান-৩’এর যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘চন্দ্রযান-২’এর ব্যর্থতার কাহিনিকে মাথায় রেখেই। তাই বুধবার শেষ বেলায় এসেও ‘ইসরো’র ওয়ার রুমে ছিল জমাট বাঁধা উৎকণ্ঠা, আবার একই সঙ্গে সাফল্যের আশা এবং উদ্দীপনাও! ইসরোর এক বিজ্ঞানীর মতে, চাঁদে এখন সবে ভোর হল। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই মাটিতে পা রাখল ‘বিক্রম’। তার দরজা খুলে গিয়ে পেটের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসেছে রোভার প্রজ্ঞান। এই যন্ত্রগুলির শক্তির উৎস সূর্যই। সৌরশক্তিতে কাজ করছে সব যন্ত্রপাতি। আপাতত আগামী ১৪ দিন চাঁদে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করবে প্রজ্ঞান। পৃথিবীর হিসাবে ১৪ দিন চাঁদে আসলে এক বেলা মাত্র। ১৪ দিন পরেই চাঁদের মাটিতে সূর্য ডুবে যাবে। এখন ১৪টা দিন আমাদের অনেক অজানা তথ্য, জ্ঞান আহরণের পালা। নতুন আবিষ্কারের শিহরণে ভারতের তেরঙা উড়িয়ে অসীম সম্ভাবনাময় একটা দিন শুরু হল চাঁদের দেশে!!