করোনাকালে ‘জাতীয় প্রযুক্তি দিবস’, ঠিক কতটা তাৎপর্যপূর্ণ ? । এম ভারত নিউজ

user
0 0
Read Time:6 Minute, 20 Second

গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে আজ পালিত হচ্ছে, ‘জাতীয় প্রযুক্তি দিবস’। হ্যাঁ ১১ই মে দিনটি ভারতে পালিত হয় ‘জাতীয় প্রযুক্তি দিবস’ হিসাবে। দিনটি শুরু করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। দেশের উন্নয়নে বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীদের অবদান অনস্বীকার্য, তাই জাতীয় প্রযুক্তি দিবস পালনের কথা বলেন তিনি। আজকের দিনটি শুধুমাত্র এই একুশ শতকে দাঁড়িয়ে সভ্যতার অগ্রগতির হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণই নয়, এক রোমহষর্ক ইতিহাসও আছে আজকের দিনটির।

১১ ই মে ১৯৯৮, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে, রাজস্থানের পোখরানে একটি পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় ভারত।পোখরানে হওয়া পাঁচটি পরীক্ষার মধ্যে ১১ টি পরীক্ষা ১১ ই মে এবং দুটি ১৩ ই মে অনুষ্ঠিত হয়। ১১ ই মে পরিচালিত পরীক্ষায় রিখটার স্কেলে ৫.৩ কম্পন রেকর্ড করে তিনটি পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ করে ভারত। এটি ছিল ভারতের দ্বিতীয় পরমাণু পরীক্ষা৷ এদিন ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। গোটা বিশ্বের নজর এড়িয়ে এদিন পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে সফল হন বিজ্ঞানীরা। পোখরানে হওয়া এই পারমানবিক পরীক্ষাটির কোড নেম ছিল ‘অপারেশন শক্তি’। এই পরীক্ষাটির ঠিক দুদিন পর আরও দুটি পরীক্ষা চালায় ভারত।

প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) আজকের দিনেই ২৩ বছর আগে পরীক্ষা করে ত্রিশুল নামের একটি ক্ষেপণাস্ত্র। ,এটি একটি স্বল্প পাল্লার অগ্নিবিদ্যুত ক্ষেপণাস্ত্র। তার পরই ভারতকে ‘পারমানবিক রাষ্ট্র’ হিসেবে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী। শুধু তাইই নয়, আজকের দিনেই ১৯৯৯ সালে হংস থ্রি নামে দু আসন বিশিষ্ট একটি বিমান তৈরি করে ভারত। হংস থ্রি তৈরি হয়েছিল সম্পুর্ন ভারতীয় প্রযুক্তিতেই। গত ২২ বছর ধরে আজকের দিনটিতে দেশে পালিত হয়ে আসছে জাতীয় প্রযুক্তি দিবস। আজকের দিনটি ভারত সম্পুর্ণ রূপে সমর্পণ করেছে প্রযুক্তিকে, বিজ্ঞানকে, উন্নতিকে সর্বোপরি প্রগতিকে।

আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ভারতের সবচেয়ে বড় বিপদ করোনা ভাইরাস। প্রতিদিন এই ভাইরাসের আক্রমনে মৃত্যু হচ্ছে অগণিত মানুষের। এহেন কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েও হাল ছাড়েনি ভারত। বীরবিক্রমে সে লড়ে যাচ্ছে নিজের প্রযুক্তিগত উন্নতিকে ঢাল বানিয়ে। মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইতে নেমে ভারত একের পর এক তৈরি করছে ভ্যাক্সিন, ওষুধের মতন অস্ত্র। সদ্য কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সবুজ সঙ্কেত পেয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা DRDO এর তৈরি নতুন ওষুধ ২-ডিজি । মাত্র দিন তিনেক আগেই তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের রিপোর্টে সন্তুষ্ট হয়ে ক্যান্সারের পুরোনা এই ওষুধটিকে করোনার চিকিৎসায় জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (DCGI)। এখানেই শেষ নয়, এই করোনা আবহে রেকর্ড সময়ে ভারতে তৈরি হয়েছে করোনার ভ্যাক্সিন। এই ভ্যাক্সিনের একটি ডোজেই মৃত্যুর ঝুঁকি ৮০% পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে ভারতের প্রযুক্তিগত উন্নতির আরও একটি বিরাট উদাহরণ হল চিনের বিরুদ্ধে ভারতের শক্তি বৃদ্ধি। এই মুহুর্তে ভারতের সবচেয়ে বড়ো প্রতিদ্বন্দ্বী চিন। চিনের সামরিক ও প্রতিরক্ষা শক্তিকে খাটো করে দেখাটা নেহাতই উন্মাদনা ছাড়া আর কিছু না হলেও চিনের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হতে প্রায় প্রস্তুত ভারত। গত ৫ বছরে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র আমদানিকারক দেশের স্থান দখল করেছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং ইসরায়েল থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র আমদানি করার সাথেসাথেই বিপুল পরিমান অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে ভারত। পরমানবিক শক্তি বা অস্ত্রের কথা এক্ষেত্রে বলাই বাহুল্য।

নিজের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ভারত পাড়ি জমিয়েছে মঙ্গলে। এনেছে সফলতা। এপিজে আবদুল কালামের মতন পৃথিবী খ্যাত বৈজ্ঞানিকদের মস্তিষ্কপ্রসূত প্রযুক্তি, আবিষ্কার ভারতের শক্তি,ভারতের অস্ত্র, ভারতের মূলধন। তাই সে যতই ‘শান্তি প্রিয় শান্ত ছেলে’ হোকনা কেন, শত্রু এলে হাতে ‘অস্ত্র’ তুলে নিতে দ্বিধা করবেনা এক মুহুর্তও। সত্যিই সেলুকাস। বড় বিচিত্র এ দেশ!

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Next Post

ইসরায়েলে রকেট হামলা, নিহত এক ভারতীয় মহিলা । এম ভারত নিউজ

অব্যাহত ইসরায়েল প্যালেস্তাইন সংঘাত, নিহত হলেন ভারতের কেরলের এক বাসিন্দা। ইসরাইলের আসকেলন অঞ্চলে,একটি বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন তিনি। মৃত ওই মহিলার নাম সৌমা। ইদুক্কি জেলার কেরিথডু অঞ্চলের বাসিন্দা, সৌমা, গত সাত বছর ধরে ইসরাইলে গৃহ পরিচারিকার কাজ করতেন এবং সেই উদ্দেশ্যেই দীর্ঘদিন যাবৎ ওখানেই বসবাস তাঁর। এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য […]

Subscribe US Now

error: Content Protected