রাজ্যে এসে ২৬-শে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বলেছেন ২৬ শে পরিবর্তন করুন। অনুপ্রবেশ রুখবে বিজেপি। একইসঙ্গে রাজ্যে ‘ক্রমবর্ধমান’ দুর্নীতি নিয়েও সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার দাবি, ইউপিএ আমলের তুলনায় বাংলাকে অনেক বেশি টাকা দেওয়া হয়েছে অথচ সেই টাকা সরাসরি মানুষের কাছে পৌঁছছে না। সেই টাকা তৃণমূল নেতাদের পকেটে যাচ্ছে। প্রসঙ্গত রাজ্যে এসে পেট্রাপোলে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই এই বক্তব্য পাওয়া গিয়েছে তার কাছ থেকে। যদিও এদিন অমিত শাহের এই বক্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে বেশি সময় নেয়নি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূল কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতা তথা প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কুনাল ঘোষ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে বলেছেন, অমিত শাহজিকে আমরা ২০২১ সালেও দেখেছি। একুশের ভোটে তিনি ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেছিলেন। পরবর্তীতে এবারের লোকসভা নির্বাচনেও এ ধরনের কথা বলতে দেখেছি। একুশেও তৃণমূল জিতেছিল, ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনেও বাংলায় জিতেছে তৃণমূল।
কুনাল ঘোষের দাবি, অমিত শাহ বাংলায় যাতায়াত করতে পারেন কিন্তু তার কোন রাজনৈতিক প্রভাব বাংলার নির্বাচনে নেই। বাংলার মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে এ রাজ্যের ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মানুষের ভালোবাসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই রয়েছে। কুনাল ঘোষ বলেন, উনি একবার এসে বলবেন একুশ একবার বলবেন ২২, একবার বলবেন ২৪ একবার বলবেন ২৬। ক্রমশ ওদের ক্ষমতায় আসার দিন তো পিছোতেই থাকছে। অমিত শাহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেই হিসাবে তার চেয়ারের গুরুত্ব আছে। কিন্তু বাংলায় তিনি রাজনৈতিক পর্যটক, বাংলার রাজনীতিতে তার কোনো প্রভাব নেই।
এদিন অমিত শাহের বলা অনুপ্রবেশ ইস্যুতেও তাকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন কুনাল। তিনি বলেন, যদি অনুপ্রবেশের কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন তাহলে তো সেটা আত্মঘাতী গোল। কুনালের কথায়, অনুপ্রবেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তের সমস্যা। যে সীমান্ত পাহারা দেয় অমিত শাহের দপ্তরের অধীনে থাকা বিএসএফ। ওটা কলকাতা পুলিশ বা রাজ্য পুলিশের জায়গা নয়। অমিত শাহ যখন নিজের মুখে বলেন অনুপ্রবেশ একটা সমস্যা তখন ধরে নিতে হবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তথা সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় সমস্ত সংস্থার ব্যর্থতার ব্যর্থতার কথা বলছেন। অমিত শাহের এই কথা তো আত্মঘাতী গোলের মত। কুনালের ভাষায়, বিএসএফের কার কাজ করার ক্ষেত্র ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়ি ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করেছেন তারপরেও যদি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুপ্রবেশ নিয়ে আর্তনাদ করতে হয় তাহলে অবশ্যই এটি সেমসাইড গোল।
অমিত শাহের দুর্নীতির অভিযোগের জবাব দিয়েছেন কুনাল। তিনি বলেন, যদি দুর্নীতির কথা ওঠে, বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির তালিকা রয়েছে তা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হবে। আসলে উনারা বাংলাকে বঞ্চনা করছেন। ১০০ দিনের কাজ থেকে শুরু করে আবাস একটা পয়সাও দেয়নি অমিত শাহের সরকার। ১০০ দিনের কাজ নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। সেই দাবিও তারা মানেননি। রাজ্যের তহবিল থেকে টাকা দিতে হচ্ছে। অন্য রাজ্যকে টাকা দিলেও বাংলাকে আবাসের টাকা দেওয়া হচ্ছে না। বাংলা থেকে ট্যাক্স তুলে নিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু বাংলার প্রাপ্য বকেয়া এক লক্ষ সত্তর হাজার কোটি টাকার বেশি। কুনাল ঘোষ বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন তারপর মুখে কথা বলছেন কেন শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন না। তথ্য দিয়ে দেখান না কোন খাতে কত টাকা দিয়েছেন।