ভবানীপুর উপনির্বাচনকে লক্ষ্য রেখে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার নিজের কেন্দ্র ভবানীপুরে প্রচারে গিয়ে কি বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? ভবানীপুর কেন্দ্রের ভোটারদের উদ্দ্যেশ্যে তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্য, ভবানীপুরের উপনির্বাচনে তিনি না জিতলে অন্য কেউ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী অপরিবর্তিত রাখতে তাঁকেই ভোট দেওয়ার আর্জি জানাতে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিন ভবানীপুরে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “আমি না জিতলে অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন। আমাকে মুখ্যমন্ত্রী রাখতে ভোট দিন। আমার কাছে প্রতিটা ভোট দামি।” এদিন নিজেকে জনগণের ‘পাহারাদার’ বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন বিধানসভা ভোটের আগের মতই চেনা মেজাজে ধরা দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে তাঁর হেরে যাওয়াকে কেন্দ্র করে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে রীতিমত তোপ দাগলেন তিনি। তাঁর সাফ বক্তব্য, “২০২১-এর নির্বাচনে কৃষক আন্দোলনে জায়গা নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছিল। তাই দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু ওখানে যে কী ভাবে হারানো হয়েছে তা প্রকাশ্যে আসবে। আদালতে মামলা চলছে। জানা যাবে, আমার বিরুদ্ধে সেখানে কী করা হয়নি! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হলে ভবানীপুর থেকেই হবে। এটা ভাগ্যের খেলা। আপনাদের ছেড়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।” তাঁর জেতার রাস্তা প্রশস্ত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি ভোটই যে সমান গুরুত্বপূর্ন একথা টেনে তিনি বলেন,”অনেকে ভাবছেন দিদি এমনিই জিতে যাবে। কিন্তু প্রতিটা ভোট দামি। একটা ভোট না দিলে আমার ক্ষতি হবে। ভোট না দিলে আমাকে পাবেন না।”
ভবানীপুরের জনসভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধেও রীতিমত হুঙ্কার দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন,”আমি মোদী-শাহকে দাদা-ভাই বলতে পারি। এটা সৌজন্য। কিন্তু তাই বলে দেশে তালিবানি শাসন মেনে নেব না। দেশে সকলে থাকবে। দেশকে টুকরো করতে দেব না। রাজ্যকেও টুকরো করতে দেব না। সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিভাজন আসতে দেব না।” এমনকি উত্তরপ্রদেশের ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির সাথে এ রাজ্যের করোনা পরিস্থিতিও তুলনা করতে দেখা গেছে তাঁকে। এরপরেই তিনি সরব হন ত্রিপুরায় ১৪৪ ধারা জারি হওয়া নিয়েও। ত্রিপুরার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”প্রয়োজনে ত্রিপুরা, অসম, গোয়া এবং উত্তরপ্রদেশে খেলা হবে।”
এদিন ভবানীপুর জনসভা থেকে যেন ফের একবার ‘দিল্লি যাবে হাওয়াই চটি’- এই কথায় বিরোধীদের মনে করিয়ে দিতে চাইলেন মমতা। এবিষয়ে জনগণের উদ্দেশ্যে মমতার বার্তা,”আপনাদের এক একটা ভোট আগামিদিনে দিল্লির পথে পা বাড়াতে সাহায্য করবে। আপনাদের ভোট দাঙ্গাবাজদের রুখে দিতে সাহায্য করবে। এখানে গাছ পুঁতলে দিল্লিতে গিয়ে গাছ বড় হবে। এখানে গাছের চারাটা পুঁতে দিন।” আপাতত উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করেই যে বাংলায় বিজেপির ঘাঁটি দুর্বল করতে চাইছে তৃণমূল একথা অস্বীকার করার জায়গা থাকেনা।