‘পুরোপুরিভাবে কাজে ফিরতে হবে’, সুপ্রিম ভর্ৎসনার মুখে জুনিয়র চিকিৎসকরা। এম ভারত নিউজ

admin

একইসঙ্গে আদালত জানিয়েছে, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের…

0 0
Read Time:8 Minute, 26 Second

আংশিক নয়, সম্পূর্ণ কাজে ফেরার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার শীর্ষ আদালতে আর জি কর মামলার শুনানি ছিল। এ দিনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিল, শুধু জরুরি পরিষেবা নয়। সব পরিষেবাতেই কাজে ফিরতে হবে। একইসঙ্গে আদালত জানিয়েছে, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের সুরক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্য সরকারকে। এর মধ্যেই এদিন সুপ্রিম কোর্টে আরজিকর মামলার স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই।

সলিসিটর জেনারেল কাল অথবা পরশু শুনানির কথা বলেছিলেন। কিন্তু, প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, মামলা আজই শোনা হবে। নিহত চিকিৎসকের পরিবারের আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় এখনও নিহত চিকিৎসকের ছবি ঘুরছে। নির্যাতিতাকে নিয়ে ইউটিউবে সিনেমা মুক্তি পেতে চলেছে। এর বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ আইনজীবী করুণা নন্দী অভিযোগ করেন, ‘নিহতের ছবি দিয়ে হিন্দি গানের সঙ্গে রিলস তৈরি করা হচ্ছে।’ এই সব শুনে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় নির্দেশ দেন, অবিলম্বে সিনেমার মুক্তি আটকাতে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজ্য সরকার অবিলম্বে যাবতীয় ব্যবস্থা নিক। আইনজীবী মহেশ জেঠমালানি বলেন, ‘প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার (বিনীত গোয়েল) একবার নির্যাতিতার নাম বলে দিয়েছিলেন। হাইকোর্টেও বিষয়টি উঠেছিল। হাইকোর্ট বলেছিল, সুপ্রিম কোর্ট ব্যাপারটা দেখবে। কিন্তু, তাঁর বিরুদ্ধে এখনও কোনও এফআইআর হয়নি।’

আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং দাবি করেন, ‘সাধারণ মানুষ যাতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জানতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হোক। এটা কোনও সাধারণ খুনের ঘটনা নয়। ধর্ষণ-খুনে একজন নয় আরও অনেকে জড়িত। ৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সিবিআই। কিন্তু, তারা এখনও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত। তাদের সাসপেন্ড করা হোক বা ছুটিতে পাঠানো হোক।’ রাজ্য সরকারের আইনজীবী জানান, ইতিমধ্যেই ৫ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তিনি জানান, সিবিআই কারও বিরুদ্ধে তথ্য দিলেই, পদক্ষেপ করা হবে। আইনজীবী করুণা নন্দী বলেন, ‘৭ জন আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত। তারা ক্রাইম সিনেও ছিলেন। তারা কীভাবে কর্মরত? তাদের ছুটিতে পাঠানো হোক বা সাসপেন্ড করা হোক।’

চিকিৎসকদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং বলেন, ‘অভিযুক্তরা কর্মরত থাকলে জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে ফিরবেন কীভাবে?’ প্রধান বিচারপতি জানতে চায়, ‘আর্থিক দুর্নীতিতে সিবিআই স্ক্যানারে কাদের নাম আছে? আমরা এখন কেবল ধর্ষণ, খুন, আর্থিক দুর্নীতির ব্যাপারে নজর রাখছি। কিন্তু, তদন্তের ব্যাপ্তি খতিয়ে দেখার প্রয়োজন হলে দেখা হবে। এটি একটি বড় চক্রের অংশ।’ সলিসিটর জেনারেল বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্টে আমরা সেই ইঙ্গিতও দিয়েছি।’ সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই রিপোর্ট দেখে আদালত প্রশ্ন তুলেছে, ‘ঘুমন্ত অবস্থায় নিহত চিকিৎসকের চোখে চশমা কেন ? চিকিৎসকদের সুরক্ষায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ৫০ শতাংশের বেশি কাজ হয়নি কেন?’ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দেবাশিস সোমকে কি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই? সেই প্রশ্নও ওঠে এদিনের শুনানিতে। উঠে আসে, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার প্রসঙ্গও।

৯ অগাস্ট আর জি করে কর্মরত নিহত তরুণী চিকিৎসককে হত্যাকাণ্ডের ৫২ দিন পর আজ সুপ্রিম কোর্টে ফের আরজি কর মামলার শুনানি হল। এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর আরজিকর মামলার শুনানি হয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয় ২৭ সেপ্টেম্বর। কিন্তু, সেদিন রাজ্যের আইনজীবীর সমস্যা থাকায় শুনানির দিন পিছিয়ে যায়। অবশেষে সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয়। এর আগেও অবশ্য এই মামলার শুনানি একবার পিছিয়ে গিয়েছিল। গত ৫ সেপ্টেম্বর শুনানির কথা থাকলেও প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় না থাকায় শুনানি হয় ১৭ সেপ্টেম্বর।

সেই অনুযায়ী, ১২ দিন পর ফের সর্বোচ্চ আদালতে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই। আদালতের নির্দেশ ছিল, ৭ থেকে ১৪ কর্মদিবসের মধ্যে নিরাপত্তা-সহ অন্যান্য সুযোগসুবিধার কাজ শেষ করতে হবে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। সুপ্রিম কোর্ট ৩১ অক্টোবর অবধি সময় দিয়েছে।

আগের শুনানিতে শীর্ষ আদালত সিবিআইয়ের রিপোর্ট দেখে জানিয়েছিল, ‘বিচলিত’। সিবিআইকে তদন্তের জন্য আরও সময় দেওয়া প্রয়োজন বলেও জানিয়েছিল তিন বিচারপতির বেঞ্চ। পাশাপাশি, নির্যাতিতার বাবা-মায়ের লেখা চিঠির ওপরও সিবিআইকে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত। পাশাপাশি, রাজ্যের হাসপাতালগুলোয় নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে সুপ্রিম কোর্ট একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছিল।

সেই সব নির্দেশিকাগুলোর মধ্যে ছিল প্রথমত, প্রত্যেক হাসপাতালে প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব, নার্স এবং ডাক্তারদের নিয়ে তদারকি কমিটি গঠন। দ্বিতীয় নির্দেশিকা ছিল, একটি গোপন অভিযোগ সংক্রান্ত কমিটি গঠন। তৃতীয় নির্দেশিকা ছিল, যৌন হেনস্তা সংক্রান্ত একটি অভ্যন্তরীণ অভিযোগ মীমাংসা কমিটি গঠন। চতুর্থ নির্দেশিকা ছিল, ডাক্তারদের কাজের চাপ থেকে মুক্তির জন্য একটি কাউন্সেলিং সেন্টার তৈরি।

আরও পড়ুন

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Next Post

চলবে পূর্ণ কর্মবিরতি, পুজোর আগে বড় ঘোষণা জুনিয়র চিকিৎসকদের! এম ভারত নিউজ

এরপরেই তাঁরা ঘোষণা করেন, মঙ্গলবার থেকে রাজ্যের সমস্ত...

Subscribe US Now

error: Content Protected