বঙ্গে চতুর্থ দফা নির্বাচনের দিন সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল শীতলকুচি । প্রথম ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে এসেই মৃত্যু হয় ১৮ বছর বয়সি আনন্দ বর্মনের। প্রধানত দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে আনন্দের ঠিক এমনটাই জানা গেছে। যদিও এই ঘটনার জন্য বিজেপি ক্রমাগত তৃণমুলকেই দায়ী বলে মনে করেছেন ওদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ইতিমধ্যেই বারংবার মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন কেন মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হওয়া ৪ জনের প্রতি সমবেদনা শেষ নেই এবং কেনই বা আনন্দের জন্য কোন সমবেদনার জানাচ্ছেন না তিনি?
যদিও এই প্রশ্নের উত্তরে বারাসাতের জনসভা থেকে আনন্দকে শহীদের তকমা দিয়েছেন। মঞ্চে এখানে শহীদ তালিকা নির্মাণ করা হয়েছিল সেখানে শহীদ হিসেবে নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল আনন্দেরও এমনই তথ্য সামনে এসেছে। সভা মঞ্চ থেকেই মমতা বলেন, ‘শীতলকুচিতে চারজন পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছেন, একজন মারা গিয়েছে দুষ্কৃতীদের গুলিতে। মাথাভাঙার প্রার্থীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমি কাল সকালেই শীতলকুচি যাব। নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে গত ৭২ ঘণ্টার জন্য শীতলকুচি তে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের আগমন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তাই ৭২ ঘন্টা কেটে যাওয়ার পরই পুরনো কর্মসূচি অনুযায়ী শীতলকুচি উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বিধি ভঙ্গের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গত ২৪ ঘন্টার জন্য নির্বাচনী প্রচার বন্ধ করেছিল নির্বাচন কমিশন । সেই ঘটনার প্রতিবাদের ধর্নায় বসেন তিনি, পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরই ফের নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত হন তিনি। গতকাল রাতে বারাসাতে এবং বিধাননগরের সভা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । কর্মসূচি অনুযায়ী আজ উত্তরবঙ্গের যাওয়ার কথা তাঁর, সেখানে গিয়ে মৃত আনন্দ বর্মনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে ছিলেন তিনি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে আনন্দের পরিবার।
প্রসঙ্গত, রাজবংশী আনন্দকে বিজেপি খুন করেছে বলে আগেই অভিযোগ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চাওয়াও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছিলেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তবে আনন্দের পরিবারের তরফ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা বঙ্গ ভোটের পটভূমিতে এক আলাদা পথ দেখাচ্ছে বিজেপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলির জন্য, বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে কলকাতা থেকে বিশেষ বিমানে বাগডোগরা যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে যাবেন মাথাভাঙায়। আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে ফের প্রচার কর্মসূচিতে ধূপগুড়ির উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি।