রবিবার সকালেই কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বিশেষ বিমানে বোলপুর রওনা দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দিনভর ঠাসা কর্মসূচি ছিল শাহের। প্রথমেই শান্তিনিকেতন পৌঁছে বিশ্বকবির মূর্তিতে মাল্যদান করেন তিনি। তারপর গোটা বিশ্বভারতী ঘুরে দেখেন। উপাসনা গহ থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহার্য প্রতিটি ঘর থেকে শুরু করে জিনিস খুঁটিয়ে দেখেন শাহ। পরে সঙ্গীত ভবনে বেশকিছুক্ষণ সময় কাটান তিনি। সেখানে বিশ্বভারতীর কলাকুশলীদের আয়োজন করা নাচের অনুষ্ঠান দেখেন। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ ভবনে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। বিশ্বভারতী পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন শাহ। তিনি বলেন, বিশ্বভারতীতে আসতে পেরে তিনি ধন্য।
বাংলাদেশ ভবন থেকে সোজা রতনপল্লিতে বাসুদেব দাসের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারতে রওনা দেন শাহ। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, অনুপম হাজরা, রাহুল সিনহা, স্বপন দাশগুপ্তরা। বাউল বাড়িতে পৌঁছেই বাসুদেব দাসের শিবমন্দিরে পুজো দেন অমিত শাহ। তারপর মন্ত্রীকে বাড়ির উঠানে চেয়ারে বসতে দেন পরিবারের সদস্যরা। সেখানেই মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন বাউল পরিবারের সদস্যরা। গান গাইলেন তাঁরা। “হদ মাঝারে রাখব, ছেড়ে দেব না, ছেড়ে দিলে সোনার গৌর আর তো পাব না…” একেবারে মাটির গান গেয়ে অমিতের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা নিবেদন করেন তাঁরা।
এরপরই একেবারে বাঙালি খাবারে মধ্যাহ্নভোজ সারেন তিনি। মেনুতে ছিল ভাত, মুগের ডাল, রুটি, আলু-পটল-বেগুন ভাজা, আলুপোস্ত, বেগুন-পালং শাকের তরকারি, চাটনি, পায়েস, নলেন গুড়ের রসগোল্লা।
মধ্যাহ্নভোজ সেরেই পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী শাহ তাঁর বাহিনী নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বোলপুরের রোড শোতে। নজরকাড়া বর্ণাঢ্য রোড শো করেন তিনি। রোড শোকে ঘিরে সকাল থেকেই সাজো সাজো রব ছিল গোটা বোলপুর জুড়ে। তাসা, ঢাক, রায়বেঁশে, বাউল যোগে মেগা রোড করেন শাহ। থিকথিকে ভিড় থেকে শাহকে উদ্দেশ্য করে মুর্হুমুর্হু জয় শ্রীরাম ধ্বনি, উলুধ্বনি আসচ্ছিল। জনতার উদ্দেশে হাত নাড়তেও দেখা যায় তাঁকে। রোড শো শেষে মাইক হাতে নিয়ে অনুব্রতর গড় থেকে তৃণমূল সরকারকে উত্খাতের ডাক দেন অমিত শাহ। উল্লেখ্য, এদিন বোলপুরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বে বঙ্গধ্বনি যাত্রা করে তৃণমূল। অমিতের রোড শোকে কটাক্ষ করে অনুব্রতর দাবি, বাইরে থেকে লোক এনেছে বিজেপি। তাঁর কথায়, আমি চাইলে লক্ষ লক্ষ লোক আনতে পারি।
এদিনের অমিতের দিনভর কর্মসূচিতে পরতে পরতে চমক ছিল। শুধু তাই নয়, মেগা রোড শোতে যেরকম মানুষের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা ছিল, তাতে আগামী নির্বাচনে তৃণমূলকে চাপে ফেলতে যথেষ্ট বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।