বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলায় উত্তপ্ত বাংলার রাজনীতি। ইতিমধ্যে রাজ্যপালের রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে তলব করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এরপরই শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে করে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি বলেন, ‘দয়া করে আগুন নিয়ে খেলবেন না। আপনি সংবিধান থেকে সরলে আমার দায়িত্ব শুরু হবে।’ মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি এদিন তাঁর বার্তা, ‘একজন দায়িত্বশীল মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে এমন ভাষা প্রয়োগ করেন! ক্ষমা চাইলে ওঁরই সম্মান বাড়বে।’ প্রসঙ্গত ঘটনার দিন মমতা তাঁর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে নাড্ডার কনভয় হামলাকে ছোট ঘটনা
বলে দায় সারেন। সেদিন মমতা বলেছিলেন, ‘তোমার পিছনে ৫০টা গাড়ি কেন যায়? তার মধ্যে বাইকের কনভয় আবার ৪০টা। তা হলে কে দেখছিল রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে? তার মানে কি প্ল্যান করা ছিল? ছবিটা কী করে তুলল, ভিডিয়োটাই বা হল কী করে? ইউ আর সো স্মার্ট। মনে হচ্ছে স্যাটেলাইট থেকে কাজ করছে’।
এদিন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিশানা করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের আচরণ সংবিধানের পক্ষে অবমাননাকর। যা ঘটল তা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জাজনক। ডায়মন্ড হারবারের মতো ঘটনা যেন আর না ঘটে।’ রাজ্য–রাজ্যপাল সঙ্ঘাত নতুন নয়। এর আগেও মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যপাল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে সতর্ক করেছেন। এদিনই একইভাবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘দুর্নীতি এবং পক্ষপাতমূলক আচরণকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে এই রাজ্যে। বহু চিঠি দিয়েছি মুখ্যমন্ত্রীকে। কিন্তু একটারও জবাব আসেনি।’
তৃণমূলের ১০ বছরের উন্নয়নের কাজের রিপোর্ট কার্ড নিয়েও কটাক্ষ করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘১০ বছরের কৃতিত্ব দাবি করছেন। আমার চিঠির জবাবটা আগে দিন।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘১২ লক্ষ কোটির বিনিয়োগ কোথায়? মাটির নীচে না ওপরে? সমুদ্রের গভীরে নাকি আকাশে? মুখ্যমন্ত্রীর বহিরাগত তত্ত্বে রাজ্যপাল বলেন, ‘দেশের নাগরিকদেরই বহিরাগত বলছেন মুখ্যমন্ত্রী! ভারত এক দেশ, সব নাগরিক সমান। আপনি সংবিধান থেকে সরলে আমার দায়িত্ব শুরু হবে।’