করোনাকালে যাঁরা নিজের প্রাণ দিয়ে সেবা করছেন, আজকের দিনে কেমন আছেন তাঁরা ? । এম ভারত নিউজ

user
0 0
Read Time:5 Minute, 9 Second

“ওরা ঠিক মায়ের মতই ভালো”, করোনাই আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুটি, সেবিকাদের দিনরাত এক করে করা সেবা-যত্নে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরে এসেই মাকে গল্প করতে করতে প্রথম এই কথাটাই বলেছিল। কারা ওরা? ওরা হল সেবিকা। আজকের দিনটা বিশ্বব্যাপী কেবলমাত্র ওদের জন্যই উৎসর্গ করা হয়। আজ ১২ই মে, বিশ্ব সেবিকা দিবস, আধুনিক নার্সিং-এর জননী ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন হিসেবে পালিত হয় আজকের দিনটি। ক্রিমিয়ার যুদ্ধের সময় মুখ্য সেবিকার ভূমিকা পালন করেছিলেন ইংল্যান্ডের অভিজাত পরিবারের কন্যা ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল। জানা যায় ইংরেজ- তুর্কি নির্বিশেষে দুই দেশের আহত মুমূর্ষু সৈন্যদের দিনরাত ধরে প্রাণপাত সেবা করেছিলেন তিনি । শুধু তাই নয় গভীর রাতে হাসপাতালের রোগীদের প্রয়োজন দেখতে হাতে মোমবাতি নিয়ে তিনি হেঁটে বেড়াতেন। নিজের ক্লান্তি কষ্ট ভুলে নিজের সমস্তটুকু শুধু সেই মুমূর্ষু রোগীদের সেবাতেই নিমজ্জিত করেছিলেন। আর আজ তাঁকেই আদর্শ মনে করে বিশ্বব্যাপী লক্ষ্য লক্ষ্য সেবিকা দিনরাত করোনার এই অতিমারির থেকে প্রতিনিয়ত দেশের আক্রান্ত রোগীদের সেবা করে চলেছেন। এই বছরের বিশ্ব সেবিকা দিবসের থিম হল, “ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য সেবার জন্য এক দৃষ্টি।”

করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ডাক্তাররা যেখানে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন রোগীদের প্রাণ বাঁচাতে , সেখানেই নিজের প্রাণ নিমজ্জিত করে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমে এই মুমূর্ষু রোগীদের দিনরাত সেবা করে চলেছেন এই সেবিকারাই।প্রাথমিক যত্ন থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সরবরাহ করা সবেতেই এগিয়ে রয়েছেন তাঁরা। বাড়িতে ছোট্ট শিশুকে রেখে হাসপাতালে অন্যের শিশু বা কারোর বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিজ সন্তানের মতো বুকে আগলে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন এই সেবিকারাই। যে ছোট শিশুটা মাকে না পেয়ে জেদ ধরেছে ওষুধ না খাওয়ার তাঁকেও গল্পের ছলে কোলে নিয়ে ওষুধ খাওয়ানো তাঁদের কাছে ছেলে ভোলানোর মতই। কোন বিরক্তি নেই, নেই কোন ক্ষোভ, সব সময় কোন না কোন রোগীর সেবায় নিয়োজিত রয়েছে তাঁরা। কবি বোধহয় সেই কারণেই লিখেছেন-

“নার্সকে পছন্দ হলে অর্ধেক অসুখ সেরে যায়, শূন্যতা, ডেটল, গন্ধ ভাতে মাছি, সব ভালো লাগে। ” আজ আন্তর্জাতিক সেবিকা দিবসের দিনে কুর্নিশ জানাই ওদের।

দেশে চলছে করোনার বিপর্যয়, বহুদিন বাড়ির মুখ দেখেনি ওরা। তিন বেলা ঠিকমতো খাবার জুটছে না,পাছে খাবার খেতে গিয়ে কোন রোগীর অক্সিজেন সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে। দেশজুড়ে নেই অক্সিজেন, এমনকি মেডিক্যাল সরঞ্জামেরও অভাব ভীষণরকম। তারপরেও নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিবারকে দূরে ঠেলে রেখে যমে-মানুষে টানাটানির এই লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন এই সেবিকারাই। “কোভিড ওয়ারিয়রস”, এই নামেই ডাকি ওদের, তবে দেশ যখন কিছুটা সংকটমুক্ত হয়েছিল তখন হঠাৎ করেই বন্ধ করে দেওয়া হয় তাঁদের বীমা। সংখ্যায় বেশি হওয়ার কারণে ডাক্তারদের মত গুরুত্ব পায় না ওরা। কোথাও একটা টেকেন ফর গ্রান্টেড নেওয়া হয় ওদের। তবুও কোথাও নেই এতটুকু অভিমান। তবুও ওরা দিনরাত এক করে সেবা করে চলেছে। রোগীর ওই কাতর আর্তি ওদের মনে আরও একবার আদর্শ সেবিকা নাইটিঙ্গেলের কথা মনে করিয়ে দেয়। ভালোবাসা এবং সম্মানে ভালো থাকুক ওরা।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Next Post

জন্মদিনে- শ্রদ্ধার্ঘ্য উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী । এম ভারত নিউজ

আজ ১২ই মে, আজ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর জন্মদিন। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সঙ্গে বড়দের যত না সখ্য তার চেয়েও ঢের বেশি সখ্যতা শিশুদের। তাঁর দৌলতেই প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাঙালি শিশুরা বড় হয়ে উঠছে টুনটুনির বইয়ের পাতা উলটে। আর গুপি গাইন বাঘা বাইন ছাড়া যে বাঙালিত্বই অসম্পূর্ণ মশাই। ও হ্যাঁ, যে গল্পের ওপর […]

You May Like

Subscribe US Now

error: Content Protected