জিওভানি ভিজিলিওত্তো। সারা জীবনে ১০০-রও বেশি মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন আমেরিকার এই প্রতারক। আর তাই তাঁকে বিশ্বের সব থেকে বড় ‘বিগামিস্ট’ (যাঁরা কোনও আইনি বিচ্ছেদ না করেই একের পর এক বিয়ে করেন) বলে গণ্য করা হয়। ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৮১ সালের মধ্যে শতাধিক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন জিওভানি। কিন্তু কোনও স্ত্রীর সঙ্গেই তিনি আইনি প্রক্রিয়া মেনে বিচ্ছেদ করেননি। সম্প্রতি জিওভানির জীবন কাহিনির বিবরণ দিয়ে টুইটারে একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস। সেখানেই তাঁর শতাধিক বিয়ে করার উল্লেখ রয়েছে।
সম্ভবত, জিওভানি তাঁর আসল নামও ছিল না। মূলত জিওভানি পরিচয়েই তিনি বহু মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। মাঝেমধ্যে ব্যবহার করতেন অন্য নামও। শেষ স্ত্রীকে বিয়ে করার সময় জিওভানি নাকি তাঁর আসল নাম ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু কেন আইনি বিচ্ছেদ না করে একের পর এক বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন জিওভানি! বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি মূলত উচ্চবিত্ত পরিবারের মহিলাদেরই শিকার বানাতেন। অল্পবয়সি বিত্তশালী বিধবাদের প্রেমের ফাঁদে ফেলতেন জিওভানি।
শেষমেশ নিজের ‘কুকীর্তি’ লুকিয়ে রাখতে পারেননি জিওভানি। ধরা পড়ার সময় তার বয়স ছিল ৫৩ বছর। সেই সময় জিওভানি দাবি করেন, ১৯২৯ সালের ৩ এপ্রিল ইটালির সিসিলি দ্বীপের সিরাকুসায় তাঁর জন্ম। তার আসল নাম নাকি নিকোলাই পেরুসকভ। যদিও সরকারি আইনজীবীর দাবি ছিল, জিওভানির আসল নাম ফ্রেড জিপ এবং ১৯২৯ নয়, ১৯৩৬ সালের ৩ এপ্রিল তাঁর জন্ম। সরকারি আইনজীবী এ-ও দাবি করেন, জন্মস্থান নিয়েও মিথ্যে বলছেন জিওভানি। ইটালি নয়, আসলে নাকি আমেরিকার নিউ ইয়র্কে জন্মেছিলেন তিনি।
প্রতি বারই জাল পরিচয় ব্যবহার করে মোট ১৪টি দেশের মহিলাদের বিয়ে করেছিলেন জিওভানি। যার মধ্যে শুধু আমেরিকারই ২৭টি শহরের মহিলাদের তিনি বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর কয়েক দিন সংসার করার পরই নতুন স্ত্রীর অর্থ এবং গয়না নিয়ে পালিয়ে যেতেন জিওভানি। এমনই ‘কীর্তিমান’ ছিলেন তিনি। এক শহর থেকে পালিয়ে জিওভানি আশ্রয় নিতেন অন্য শহরে। আগের স্ত্রীর হাতিয়ে নেওয়া টাকা দিয়ে এবং গয়না বিক্রি করে জীবন কাটাতে কাটাতেই চলত নতুন ‘শিকারের’ খোঁজ।