ওড়িশার বালাসোরে শুক্রবারের ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকাজ শেষ করে এখন চলছে লাইন মেরামতির কাজ। এরই মধ্যে সামনে এল বালাসোর রেল দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ, যা নিয়ে বিরাট রহস্য দানা বেঁধেছে। কেন রহস্য? জানা যাচ্ছে, ভুল লাইনে ঢুকে পড়েছিল আপ ১২৮৪১ শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এর জেরেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। জানা যায়, বাহানগা বাজার স্টেশন অতিক্রম করার পর লুপ লাইনে ঢুকে পড়েছিল চেন্নাইগামী এক্সপ্রেস ট্রেনটি।
এবার আসি লুপ লাইন কি? কোনও স্টেশনে ঢোকা বা বেরোনোর সময় রেললাইনে তৈরি করা হয় লুপ লাইন। এই ক্ষেত্রে বাহানগা বাজার স্টেশন ছাড়িয়ে যখন করমণ্ডল এক্সপ্রেস ভুবনবেশ্বরের দিকে যেতে শুরু করে, তখন সেটি লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে। এই লুপ লাইন সাধারণত মালগাড়ি দাঁড়ানোর জন্যই তৈরি হয়। তাহলে কেন লুপ লাইনে ঢুকল করমণ্ডল এক্সপ্রেস?সিগন্যালিংয়ের গোলমাল নাকি চালকের ভুল? লুপ লাইনে ঢোকার সময় ট্রেনের গতিবেগ কত রাখতে হয়? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এখন তদন্ত শুরু করছে রেল।
লুপ লাইন ৭৫০ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। তবে এখন ১৫০০ মিটার পর্যন্ত লম্বা লুপ লাইন তৈরি করার দিকে নজর দিয়েছে রেল। এই লুপ লাইন কার্যত মালগাড়ির জন্য ‘বাইপাস লাইন’। যাত্রীবাহী ট্রেন যখন পাস করে, তখন মালগাড়িকে ওইসব লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এটাই লুপ লাইনের উদ্দেশ্য। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, লুপ লাইনে ঢোকার সময় ট্রেনের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটার। অথচ নিয়ম অনুযায়ী ট্রেন লুপ লাইনে ঢুকলে গতিবেগ থাকার কথা ১৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। একই সঙ্গে বিশেষ রুট সঙ্কেত জ্বলার কথা। কিন্তু এক্ষেত্রে সেসব কিছুই হয়নি। রেল সূত্রে খবর, প্রচণ্ড গতিতে লুপ লাইনে ঢুকে পড়েই দুর্ঘটনার শিকার হয় করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ২৩ সেকেন্ডের মধ্যে ২৪ কোচের করমণ্ডলের গতিবেগ শূন্য হয়ে যায়। সংঘর্ষের অভিঘাতে ২১ টি কামরা মুহূর্তের মধ্যে লাইন থেকে ছিটকে পড়ে যায়। ঘটে যায় শতাব্দীর ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনা।