আজ নারদা মামলার শুনানি শুরু থেকেই তদন্তকারী সংস্থা বনাম তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা, এই বিষয়টিতে ক্ষমতাশালী রাজনৈতিক দলের আধিপত্য বিস্তারের প্রবণতাকে দর্শানোর চেষ্টা করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা। তিনি বলেন, কোন রাজনৈতিক দলের আধিপত্য বিস্তার থাকলে সেখানে বারংবার তদন্তকারী সংস্থাকে সেই রাজনৈতিক দলের রোষের শিকার হতে হয়। এই ঘটনায় প্রথম নয় ,২০১৪ সালেও এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে ছিল।
![](https://mbharat.in/wp-content/uploads/2021/06/WhatsApp-Image-2021-06-01-at-17.11.29-1024x683.jpeg)
২০১৪ সালের সল্টলেকের ঘটনা উল্লেখ করে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা বলেন ।‘‘সল্টলেকে সিবিআই অফিসারকে আটকে রাখা হয়। এক জন গ্রেফতার হওয়ার পর ধর্নাও দেওয়া হয়। সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে প্রচুর লোক স্লোগান তোলেন। লোকাল বিধায়করা হুমকিও দিয়েছিল।’’তিনি আরও বলেন তদন্তকারী সংস্থার বিরোধী পক্ষে যদি কোনো রাজনৈতিক দল থেকে থাকে তবে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে চলে।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, “যে ঘটনা বলছেন সেখানে কি গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত জামিনের আর্জি করেছিলেন?এই ঘটনাগুলোয় কাজে বাধা দেওয়ার জন্য সিবিআই কি কারও বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল? একজন অভিযুক্তকে যখন আইনি রক্ষাকবচ দেওয়া হচ্ছে, তখন আপনার করা অভিযোগগুলোর কী সম্পর্ক?সাধারণ মানুষের উপর গোটা ঘটনা প্রভাব ফেলবে। কিন্তু এই অভিযুক্তরা যদি জড়িত না থাকেন তাহলে কেন তাঁরা ভুক্তভোগী হবেন?”
পরবর্তীতে এই বাদানুবাদের মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলতে থাকে শুনানি। আজ এই বাদানুবাদের মধ্য দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ টেনে আনেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা। তিনি বলেন, ‘‘স্বয়ং আইনমন্ত্রী হাজার মানুষের সঙ্গে আদালতের বাইরে বিক্ষোভ দেখালেন। বিচারক প্রভাবিত না হলেও সাধারণ মানুষের মনে হতে পারে এই জামিন বাধ্য হয়ে দেওয়া।’’
এ বিষয়ে নিরপেক্ষতার প্রসঙ্গ টানলেন বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন । যদিও তাঁর উত্তরে সলিসিটর জেনারেল বলেন, ‘‘ভেবে দেখুন বিশেষ আদালতে মন্ত্রীরা গিয়েছিলেন শুধুমাত্র জামিন করানোর জন্য। আমি বার বার বলছি এই ধরনের পরিকল্পিত গুন্ডামি পশ্চিমবঙ্গে ঘটেছে। এটা প্রথম নয়। এর আগে যখন পুলিশ কমিশনারকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করেছিল তখনও এমন ঘটেছিল। যখন ক্ষমতাসীন কেউ গ্রেফতার হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী তার প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন।’’
পরবর্তীতে এই ব্যাখ্যার ভিত্তিতেই সলিসিটর জেনারেলের প্রশংসা করেন বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন। তিনি বলেন, ‘‘মেহতা বেশ উজ্জ্বল যুক্তি দিয়েছেন আপনি। আপনার যুক্তি শুনে নিজেকে ছাত্র হিসাবে মনে হচ্ছিল।’’এই প্রশংসার পরে আজকের মত শুনানি শেষ করা হয় হাইকোর্টে। কোর্টের বৃহত্তর পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের তরফ থেকে জানানো হয়, আগামীকাল বেলা সাড়ে ১১ টায় পুনরায় এই শুনানি শুরু হবে।