বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার ঝাড়গ্রামে সরকারি পরিষেবা বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে কেন্দ্রের সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বিজেপি তৃণমূল ও কংগ্রেসকে একযোগে আক্রমণ শানালেন। মমতা বলেন, ‘এখানে তো রাম, বাম, কংগ্রেস সব এক হয়ে গিয়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে, ওখানে ‘ইন্ডিয়া’ আর এখানে ‘বিজেন্ডিয়া’। বিজেপির সঙ্গে বসে আছে। লজ্জাও করে না। মানুষের একটা নীতি থাকে। সেই নীতিটা মেনে চলতে হয়। আমাদের লড়াই সিপিএমের বিরুদ্ধে বাংলায়, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বাংলায়, যদি এমন করতে থাকে ওরা।’
আচার্য বিল নিয়েও ঝাড়গ্রামের অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যপালকে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রাজ্যাপালকে উদ্দেশ্য করে মমতা বলেন, ‘আমাদের গভর্নর মহাশয় কালো চশমা পরে জ্ঞান দিচ্ছেন। পরতেই পারেন, একটার জায়গায় ১০টা। আমরা পাঠালেও করে না, নিজের ইচ্ছে মতো কেরালা থেকে লোক ঢুকিয়ে দিচ্ছে। কেরালার অনেক বন্ধুই আমাদের এখানে থাকছে, তাতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু ভিসি হতে গেলে ১০ বছরের বেশি অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা থাকা উচিত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একজনকে ভিসি করেছেন, তিনি কেরালার আইপিএস ছিলেন। তাঁর সঙ্গে এডুকেশনের কোনও যোগাযোগ নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখানে ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি, না আছে ভিসি, না আছে রেজিস্ট্রার। তার কারণ পাঠালেই উনি ওনার মতো বিজেপির একটা লোক বসিয়ে দেবে। আমি মুখ্যসচিবকে অনুরোধ করব, ইমিডিয়েট আমাদের যে রেকমেন্ডেশন সেই রেকমেন্ডেশন হায়ার এডুকেশন থেকে করে দিতে। আগে এক জন রেজিস্ট্রার অন্তত পাঠান। পরীক্ষার সার্টিফিকেট দিতে পারছে না।’
পাশাপাশি, ইউনিফর্ম সিভিল কোড বা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কেন কার্যকর করা হবে, ঝাড়গ্রামে গিয়ে আরও একবার সেই প্রশ্ন তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর হলে বিবাহের মতো বিষয়েও সবার জন্য অভিন্ন আইন থাকবে। সেই প্রসঙ্গ টেনেই এদিন আদিবাসী সম্প্রদায়কে মমতা বোঝান, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের জন্য তাঁরা তাঁদের বিয়ের নিয়ম বদলাতে যাবেন কেন? এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হঠাৎ করে বলছে ইউনিফর্ম সিভিল কোড করতে হবে। মানে ওদের নিয়মে বিয়ে করতে হবে। কেন করবেন? আপনাদের ততো বিয়ের কি সুন্দর একটা সিস্টেম আছে। আপনাদের জাহের থান আছে, মাজেরথান আছে। আবার মুসলিম সম্প্রদায়ের বা হিন্দুদেরও বিয়ের আলাদা পদ্ধতি আছে।’ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় মমতা বার্তা দেন, ‘ইউনিফর্ম সিভিল কোড করতে দেব না। যেমন আছে, সব তেমনই থাকবে। সবাই নিজের স্বাধীনতা মতো পোশাক পরবে, চলাফেরা করবে, পড়াশোনা করবে।’