নিজস্ব প্রতিবেদনঃ একুশের নির্বাচনে বাংলায় ক্ষমতায় আসার ডাক দিয়েছে বিজেপি। বলা ভালো ২০০ আসনের টার্গেট বেঁধে দিয়েছেন মোদী ও তাঁর সেনাপতিরা। সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন রকম কর্মসূচি নিয়ে চলেছে পদ্মশিবির। সংগঠন জোরদার করতে আর মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও “পরিবর্তন যাত্রা” বের করেছে তারা। সেই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছে সুসজ্জিত রথ। তবে তৃণমূলও পিছিয়ে নেই। ভোটের মুখে ‘দুয়ারে সরকারে’র মতো প্রকল্প বের করে ‘স্বাস্থ্যসাথী’র কার্ড বিলি করছে। জনসমর্থন পেতে মরিয়া তৃণমূল ‘পাড়ায় পাড়ায় সমাধানে’র মতো কর্মসূচি নিয়েছে। কয়েকদিন আগেই আবার ‘মা’ নামের একটি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে, যাতে করে কিনা গরিব মানুষকে মাত্র পাঁচ টাকায় ডিম-ভাত-তরকারি খাওয়ানো হচ্ছে। অর্থাৎ প্রচারের মাধ্যম হিসেবে কোন কিছুই বাদ দিচ্ছে না ঘাসফুল শিবির। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

এতদূর পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্যের সাধারণ মানুষের মোবাইল আসন্ন ভোটের আগে তৃণমূলের প্রচারের অন্যতম মাধ্যম হয়ে ওঠায় কার্যত বিরক্ত রাজ্যবাসী। দিন নেই, রাত নেই সবসময়ই একটি ল্যান্ড লাইন নম্বর থেকে ফোন আসছে সাধারণ মানুষের ফোনে। ব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও কেউ-কেউ বেশ আগ্রহ নিয়েই ফোনটি রিসভ করলেই একটি মহিলা বা পুরুষ কণ্ঠ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে বাণী শোনাচ্ছে। শোনানো হচ্ছে সম্প্রতি ‘দিদির দূত’ প্রকল্পের সুবিধার কথা। গত কয়েকদিন ধরে এই ফোন পাননি তেমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বাড়ির বয়স্ক থেকে ছোট সদস্য, প্রত্যেকের ফোনেই এমন ফোন আসছে। বাড়ির বয়স্ক মানুষটি ফোন বাজছে দেখে তড়িঘড়ি করে ফোনটি রিসভ করছেন, কিন্তু রিসিভ করা মাত্রই প্রচারের বাণী শুনে বেজায় চটছেন। এমন অভিযোগ ইদানিং করে বেশ শোনা যাচ্ছে।

প্রচারের মাধ্যম হিসেবে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি গানও এখন মানুষের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে। গানের মাধ্যমে নজর কেড়ে, মানুষের মন জয় করে ভোট আদায় করতে চাইছে রাজনৈতিক দলগুলি। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলকে কি তবে নিজের জমি ধরে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ? নাকি দলের রক্তক্ষরণে আর বাংলায় বিজেপির ঘাঁটি মজবুত হচ্ছে বলে ভয় পাচ্ছে ঘাসফুল শিবির ? আর সেই কারণেই নিজের ঘাঁটি শক্ত করে ধরে রাখতে এবং তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মসনদে বসতে মানুষকে নাজেহাল করে হলেও ভোটের খেলায় মেতে উঠছে তারা। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক দল। তবে এতে মানুষের মন তো দুরস্ত বরং বিরক্তি ছাড়া আর কিছুই পাবে না তারা । ফলস্বরূপ ভোটব্যাঙ্কও বাড়বে না বলেই দাবি করছে শাসকের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী গেরুয়া শিবির ।