জাতীয় দলের মর্যাদা হারাল তৃণমূল। বাম দল সিপিআই এবং মহারাষ্ট্রের নেতা শরদ পওয়ারের এনসিপি-র জাতীয় দলের তকমাও প্রত্যাহার করা হয়েছে। অন্যদিকে, অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি পেয়েছে জাতীয় দলের মর্যাদা। সোমবার নির্বাচন কমিশনের তরফে একথা জানানো হয়। অরবিন্দ কেজরীবাল জানিয়েছেন, এই মর্যাদা একটা ‘বড় দায়িত্ব’। এই ঘটনাকে তিনি অলৌকিক ঘটনা বলেও উল্লেখ করেছেন। হিন্দিতে টুইট করে বলেছেন, “এত অল্প সময়ে জাতীয় দল? এটা অলৌকিকতার থেকে কম কিছু নয়। সবাইকে অনেক অভিনন্দন।”
![](https://mbharat.in/wp-content/uploads/2021/01/tmc-1024x576.jpg)
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অরুণাচল ও মনিপুর প্রদেশে রাজ্য পর্যায়ের দল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় তৃণমূলকে জাতীয় দলের মর্যাদা দিয়েছিল কমিশন। সে সময় লোকসভা ভোটে ৪টি রাজ্য থেকে ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ‘রাজ্য দল’ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ৭ বছরের মাথাতেই সেই মর্যাদা হারাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
নির্বাচনী আইন অনুযায়ী জাতীয় দল হতে গেলে তিনটি শর্তের অন্তত একটি পূরণ করতে হয়। এক, লোকসভায় অন্তত চারটি রাজ্য থেকে ৬ শতাংশ ভোট পেতে হবে। দুই, লোকসভায় ৩টি রাজ্য থেকে অন্তত ১১টি আসন (মোট আসনের ২ শতাংশ) জিততে হবে এবং আগের জেতা আসনের অন্তত চারটি পুনরায় জিততে হবে। তিন, অন্তত চারটি রাজ্যে ‘রাজ্য দলের’ তকমা পেতে হবে।জাতীয় দলের মর্যাদা হারানোয় বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা ছাঁটাই হতে পারে তৃণমূলের। প্রথমত, কোনও জাতীয় দলের চিহ্নকে দেশের অন্য কোনও রাজ্যে অন্য কোনও দল ব্যবহার করতে পারবে না। পশ্চিমবঙ্গ এবং মেঘালয় বাদে মমতার জোড়াফুলের সেই ‘রক্ষাকবচ’ আর থাকবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। দ্বিতীয়ত, দলীয় দফতর তৈরি করার জন্য সরকারের থেকে জমি বা বাড়ি পায় জাতীয় দলগুলি অন্য দল তা পায় না। তৃতীয়ত, নির্বাচনের সময় জাতীয় দল সর্বাধিক ৪০ জন ‘তারকা প্রচারক’ ব্যবহার করতে পারে।
বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। দিল্লির মসনদে প্রাসঙ্গিকতা বাড়াতে সর্বোতভাবে চেষ্টা করছে ঘাসফুল শিবির। সেই আবহে তৃণমূলের এই তকমা হারানো, অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। কমিশন এই কাজ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত করেছে বলে মন্তব্য করে দলের সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছেন, তৃণমূল আইনি পথে লড়াই করবে। সৌগত রায় বলেন, “সুপ্রিম কোর্টও বলে দিয়েছে যে নির্বাচন কমিশন কীভাবে চলছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই কাজ করেছে কমিশন। যা যা তথ্য দেওয়ার, সব দেওয়া হয়েছিল। তাও জাতীয় দলের তকমা বাতিল করেছে। যা যা করার আগামিদিনে দেখতে পাবেন।”