কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বুধবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় কোনও বাধা নেই। কিন্তু শর্ত রয়েছে অনেক। কোর্ট নির্দেশ দিতে না দিতেই তৎপরতা শুরু পুলিশের। পাঁচিল তোলা হয়েছে তৃণমূলের সভা ও ডিএ আন্দোলনকারীদের মঞ্চের মাঝখানে। বুধবার শহিদ মিনার চত্বরে ছাত্র-যুব সমাবেশ তৃণমূলের। প্রধান বক্তা অভিষেক। কিন্তু যেখানে সভা হবে তার একেবারে কাছেই বেশ কিছুদিন ধরে মঞ্চ বেঁধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন বর্ধিত হারে বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। পাশাপাশি দুই কর্মসূচি যাতে সংঘাতের পরিবেশ না তৈরি করে সে জন্য পুলিশ এই দিনটার জন্য ওই এলাকায় ডিএ আন্দোলনকারীদের ধর্না বন্ধ রাখার আর্জি জানিয়েছিল। উল্টো দিকে, আন্দোলনকারীরা আদালতে যান। প্রশ্ন তোলেন, একটি কর্মসূচি চলাকালীন পুলিশ কীভাবে অন্য কর্মসূচির অনুমতি দিল?

বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে এই মামলার শুনানির পরে আদালত কিছু শর্ত আরোপ করে তৃণমূলের সভার উপরে। সেখানে বলা হয়, যেখানে ডিএ আন্দোলনকারীদের অবস্থান, সেই এলাকায় দ্বিস্তরীয় ব্যারিকেড থাকবে। বাঁশের পাশাপাশি টিন দিয়ে ব্যারিকেড করতে হবে। আন্দোলনকারীদের যাতে কেউ বিরক্ত না করে, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেইমত তড়িঘড়ি ব্যারিকেড তৈরি করতে শুরু করে পুলিশ। প্রায় ৭ ফুট উঁচু টিনের পাঁচিল তৈরি করা হয়। একই সঙ্গে ২টি কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা মানুষের প্রবেশপথও আলাদা করা হচ্ছে। তৃণমূলের সভায় যাঁরা আসবেন তাঁদের ঢুকতে হবে ধর্মতলার বিধান মার্কেটের দিক থেকে। আর ডিএ নিয়ে ধর্নায় যাঁরা যোগ দেবেন তাঁদের প্রবেশপথ কার্জন পার্কের দিক দিয়ে।
এদিকে অভিষেকের সভার অনুমতি নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘সভার অনুমতি তৃণমূল নেয়নি। এই অনুমতি পুলিশ সেনার কলার ধরে নিয়েছে। তৃণমূলের দলদাস বিনীত গোয়েল একজন ডিজি-কে পাঠিয়ে কার্যত কলার ধরে আর্মির থেকে এনওসি নিয়েছে। এর থেকে লজ্জার কিছু হয় না।’ শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, ‘কাল এরা যদি ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের গায়ে হাত দেয়, তাহলে সন্ধ্যার পরই বাংলা অচল হয়ে যাবে।’
তৃণমূল সূত্রে খবর, দুপুর ২টো নাগাদ বক্তৃতা শুরু করবেন অভিষেক। সেই সময়টাতেই তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে বক্তৃতা ও স্লোগান চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন আন্দোলনকারীরা। আদালত বলেছে, বুধবার কোনও উস্কানিমূলক বক্তৃতা করা যাবে না। শান্তিপূর্ণ ভাবে গোটা কর্মসূচি পালন করতে হবে। সব পক্ষকেই শান্তি বজায় রাখতে হবে। সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশের। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল ব্যারিকেড দিয়ে মঞ্চ তৈরি হলেও শব্দ বন্ধ কি আটকাতে পারবে তৃণমূল?