সংসদে প্রত্যাবর্তনেই ঝাঁঝালো আক্রমণে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিদ্ধ করলেন রাহুল গান্ধি৷ বিরোধী জোটের আনা অনাস্থা প্রস্তােবর ভিত্তিতে সংসদে এ দিন আলোচনায় বক্তব্য রাখেন রাহুল৷ আর সেই বক্তব্যেই তিনি মণিপুর নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় সরকারকে৷ বলেন, ‘ভারত মাতাকে বিজেপি মণিপুরে হত্যা করেছে৷ ভারতের কণ্ঠস্বর আছে, আছে একটি হৃদয়৷ আপনারা মণিপুরের কণ্ঠস্বরকে হত্যা করেছেন৷ আপনারা মণিপুরে ভারত মাতাকে হত্যা করেছেন৷ আমার মা এখানে বসে আছেন৷ কিন্তু অন্য মা, আমার ভারত মাতা, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে মণিপুরে৷ আপনারা ভারত মাতার রক্ষাকর্তা নন, আপনারা তাঁর হত্যাকারী৷’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করতে গিয়ে রাহুল বলেন, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রী এখনও মণিপুরে যেতে পারেননি, কারণ তিনি মনেই করেন না মণিপুর ভারতবর্ষের একটা অংশ, তিনি সে রাজ্যকে ভাগ করে দিয়েছেন।’ তিনি বলেছেন, চাইলেই কেন্দ্রীয় সরকার সেনা মোতায়েন করে মণিপুরে হিংসা রোধ করতে পারত, কিন্তু তা করেনি৷ এই বক্তব্যের পর সংসদের নিম্নকক্ষে ভয়ানক উত্তেজনা তৈরি হয়, রাহুলকে এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমাও চাইতে বলেন এক বিজেপি নেতা৷ এরপর রামায়ণের প্রসঙ্গও টানেন রাহুল৷ তিনি বলেন, রামের হাতে রাবনের হত্যা শুধু হয়নি, হত্যা হয়েছিল রাবনের ঔদ্ধত্যের৷ আপনারা সর্বত্র কেরোসিন ছড়িয়ে রেখেছেন৷ আপনারা মণিপুরে আগুন ধরিয়েছেন৷ আপনারা একই ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছেন হরিয়ানায়৷’
এদিকে, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্কের সময়েই মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেন, তিনি মহিলা সাংসদদের লক্ষ্য করে ‘ফ্লাইং কিস’ ছুড়েছেন! রাহুলের পরেই বলতে উঠেছিলেন স্মৃতি। অন্য দিকে, ভাষণ শেষ করে অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান রাহুল। নিজের বক্তৃতায় স্মৃতি অভিযোগ করেন, সেই সময়েই নাকি তিনি মহিলা সাংসদদের উদ্দেশে ‘ফ্লাইং কিস’ ছোড়েন। ঘটনা সেখানেই থেমে থাকেনি। স্মৃতি ওই অভিযোগ করার পরেই বিজেপির মহিলা সাংসদেরা লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার ঘরে গিয়ে তাঁর কাছে রাহুলের বিরুদ্ধে ওই মর্মে অভিযোগ করেন। বিজেপির মহিলা সাংসদদের নিয়ে স্পিকারের ঘরে গিয়েছিলেন কৃষি প্রতিমন্ত্রী শোভা করন্দলাজে। সংসদের ভিতরে সেই সূত্রে স্মৃতি তাঁর বক্তৃতায় রাহুলকে নারীবিদ্বেষী বলেও আখ্যা দেন।