অশান্তির আবহে মিটেছে ভোট। শনিবার ভোটগ্রহণ ও সোমবার পুনর্নির্বাচনের পর মঙ্গলবার সকাল থেকেই শুরু ভোট গননা। রাজ্যে মোট ৩৩৯টি কেন্দ্রে গণনা। ভোট গণনাতেও রাজ্যে অশান্তি জারি। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া এক নম্বর ব্লকের কাউন্টিং সেন্টারে সিপিএম ও বিজেপির এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। আহত হয়েছেন এক সিপিএম সমর্থক। মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা ফাটল ডায়মন্ড হারবারে। ভোর থেকেই শুরু বোমাবাজি। বিরোধী দলের এজেন্টদের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তৃণমূলের লোকজন দাঁড়িয়ে ছিল বলে অভিযোগ বাম নেতৃত্বের।
তমলুকে ২০০ মিটারের মধ্যে একটি ক্যাম্পে বিজেপির পতাকা লাগানো থাকার অভিযোগ ওঠে। তমলুক থানার আইসি পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে বিজেপি নেতৃত্বকে দ্রুত ওই ক্যাম্প খালি করে, বিজেপির পতাকা খোলা নির্দেশ দেন। হুগলিতে আইএসএফ এবং বাম প্রার্থীদের মারধর করে গণনা কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সিপিএমের পার্টি অফিসে ঢুকে লাঠি চার্জ করে পুলিশ। পুলিশের লাঠি চার্জে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। জলপাইগুড়িতে ভোট গণনা কেন্দ্রের বাইরে বেআইনি জমায়েত! লাঠি দিয়ে সরাল কেন্দ্রীয় বাহিনী। নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে ধূপগুড়ি থানার আইসি চড়-থাপ্পড় মারেন বলেও অভিযোগ।
এদিকে, ভাঙড়ে গিয়ে গণনা কেন্দ্র ঘুরে দেখলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। দিল্লি থেকে ফিরেই সোজা চলে যান সেখানে। ঘুরে দেখেন ভাঙড় এলাকা। স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে ভোট গণনা কেন্দ্রের বাইরে গাড়ি থেকেই কথা বলেন বিডিও-দের সঙ্গে। গণনা শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে কি না, সেই সমস্ত বিষয়ে খোঁজখবর নেন তিনি। অন্যদিকে, গণনা শুরু হওয়ার ২ ঘণ্টা পর রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে যান কমিশনার রাজীব সিনহা। সকাল থেকেই রাজ্যের একাধিক জায়গা থেকে সামনে এসেছে অশান্তির অভিযোগ। সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কমিশনার বলেন, “আমাদের কাছে অশান্তির অভিযোগ আসছে। আমরা স্টেপ নিচ্ছি।”
ইতিমধ্যেই অনেক জায়গায় শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের বিজয় উল্লাস। প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক এবং আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে বীরভূমের নলহাটির বানিওর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী মনোজ ঘোষকে সোমবার গ্রেফতার করেছে এনআইএ। মঙ্গলবার নির্বাচনে জয়ী হলেন ওই প্রার্থী। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের এলাকায় জিতল তৃণমূল।
গোপীবল্লভপুরের কুলিয়ানা ২৫ নম্বর বুথে দিলীপের এলাকায় বিজেপি প্রার্থী দিতে পারেনি। ওই বুথে নির্দলকে পরাজিত করে ২৪ ভোট জয়ী তৃণমূলের শিবানী দেউলি। বীরভূমের ময়ূরেশ্বর কেন্দ্রে বিজেপি নেতা দুধকুমার মণ্ডল গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে জয় পেলেন। পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জ ব্লকের আমড়াসোতায় গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটি আসন বামফ্রন্ট এবং একটি আসন তৃণমূল জিতেছে।