দেশের করোনা পরিস্থিতির মাঝেও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে মাতৃ দিবস সম্পর্কিত পোস্টের। দেশে চলছে কোভিড যুদ্ধ, সমস্ত কোভিড ওয়ারিয়রসরাই রয়েছেন যুদ্ধের প্রাঙ্গণে। কারোর মা পেশায় ডাক্তার, তো কারো সন্তান পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী। তবে করোনা যুদ্ধের ব্যস্ত জনজীবনেও মাকে মাতৃ দিবসের শুভেচ্ছা দিতে ভুলে যাননি তাঁরা। কোথাও পিপি কিট পড়েই হাতে গিটার তুলে গান করে মাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন ডাক্তার, তো কোথাও আবার স্বাস্থ্যকর্মী মায়ের জন্য নিজের হাতে কেক বেক করে অপেক্ষায় বসে আছে তাঁর ছোট্ট সন্তান। কোথায় আবার ছোট্ট সন্তান, নিজের জীবনের পাওয়া প্রথম রং তুলির সেটের রং দিয়েই বানিয়েছে মাদারস ডের কার্ড। আবার কোথাও কোনো এক বেকার ছেলে নিজের পাওয়া প্রথম বেতন থেকে উপহার কিনে এনেছে মায়ের জন্য। আর এভাবেই করোনার কঠিন পরিস্থিতিতেও মাতৃ দিবসে মেতে উঠেছে গোটা দেশ।
বাড়ির জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ সব কাজে সিদ্ধহস্তা যিনি । অসময়ের সাথী বা মুশকিলআসান ,যে কোন নামেই ডাকা যায় যাকে, আবার অন্ধকার রাস্তায় একা চলতে গিয়ে ভয় পেলে অথবা কোথাও হুট করে আঘাত পেলে সবার আগে যে ডাক টি মুখে আসে তা হল “মা”। আর আজ সেই মায়েদেরই দিন। আর এই মাতৃ দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাই বিশ্বের সমস্ত মায়েদের । শুভেচ্ছা জানাই সেই সমস্ত মায়েদেরও যারা সন্তানদের গর্ভে ধারণ না করেও, নিজেদের মমতাময়ী মাতৃত্বে লালন পালন করে চলেছে কোন এক মাতৃহারা শিশুকে। শুভেচ্ছা জানাই তাঁদের, যারা রাস্তার ধারে পড়ে থাকা নাম ঠিকানা বিহীন বাচ্চাকে তুলে নিয়ে এসে নিজের সন্তানের পরিচয় দিয়ে পৃথিবীতে যোগ্য অধিকারের জন্য লড়াই করতে শিখিয়েছেন। সম্মান জানায় তাঁদেরকেও যারা মেয়ে না হয়েও নিজের মাতৃত্ববোধ থেকে পালন করছেন অন্য কারও সন্তানকে। সম্মান জানায় সেই সমস্ত মায়েদেরও যারা অন্য এক মাকে মা হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।
একবিংশ শতাব্দীর পোস্টমর্ডানিজমের যুগে দাঁড়িয়েও, নতুন করে মায়ের ভূমিকা কখনোই বদলে যাবে না। আধুনিকতম দুনিয়াতে মা- কে মম , মাম্মি, মাম্মা বলে ডাকা হয় ঠিকই ,তবে এতে মায়ের সঙ্গে সন্তানের আত্মিক যোগে এতটুকুও পরিবর্তন আসে বলে মনে হয় না। আচ্ছা এবার আসা যাক এই দিনটি কথায়, মূলত মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে মাতৃ দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলের ক্ষেত্রে এই মাতৃদিবস পালনের দিন বিভিন্ন হতেই পারে। ১৯০৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম মাতৃ দিবস পালিত হয়। নিজের মা, অ্যান রিসে জারভিসের স্মৃতির উদ্দেশে অ্যানা জারভিস নামক এক মহিলা মাতৃ দিবসকে স্বীকৃত ছুটি হিসেবে পালনের পক্ষে কথা বলেন। এবং তারপর থেকেই এই দিনটি মাতৃ দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।