
বৃহস্পতিবার শহিদ দিবসের পর শুক্রবার নন্দীগ্রামে যৌথ সভা করলেন শুভেন্দু অধিকারী-দিলীপ ঘোষ। ছিলেন মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়র মতো নেতারাও। এদিনের মঞ্চ থেকে মমতাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে আগামী ১৯ তারিখ খেজুরিতে পাল্টা সভা করার ডাক দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। উল্লেখ্য, চলতি মাসের সাত তারিখ নন্দীগ্রামে সভা করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অন্যদিকে কথা মত পরের দিন অর্থাৎ আট তারিখ সভা করেন শুভেন্দু। এদিকে, মমতার সভা বাতিল করে আঠারো তারিখ ঘোষণা করা হয়। এদিন সে প্রসঙ্গে তুলে পরেরদিনই পাল্টা সভার ডাক দেন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কান্ডারী তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিনের সভার শুরুতেই মুকুল রায় বলেন, ‘নেতাই-নন্দীগ্রামের আন্দোলনের কৃতিত্ব শুধুমাত্র শুভেন্দুর।’ মুকুল আরও বলেন, ‘সিঙ্গুরে আন্দোলন করা ভুল হয়েছিল। বিজেপি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে টাটাকে ফেরাতে আবেদন করব।’ এদিনের সভা থেকে কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘ বাংলায় আগে অনেক সভা করেছি। কিন্তু আজকের সভা একেবারেই আলাদা। নন্দীগ্রামের এই সভা পরিবর্তনের সভা।’

এদিন কৈলাস যখন বক্তব্য রাখছেন ততই তাল কাটে সভার। মঞ্চের একপ্রান্ত থেকে হঠাৎ হৈ চৈ। বিজেপির জেলা নেতৃত্ব তখন কর্মীদের মন বুঝতে ব্যস্ত। এরপর মাইক হাতে কৈলাসও কর্মীদের শান্ত করে বসার অনুরোধ করেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়েন শুভেন্দু অধিকারী। মাইক হাতে নিয়ে বলতে শুরু করেন ‘আমি শুভেন্দু বলছি। আমাকে বিশ্বাস করেন তো? সবাই বসে পড়ুন।’ পরে শুভেন্দু বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, ‘ঢিল মেরে, প্ররোচনা দিয়ে এই সভা ভন্ডুল করার চেষ্টা হয়েছে।’
সভাস্থলে বিড়ম্বনা নিয়ে দিলীপের দাবি, ‘বিজেপি দলের মানুষ শৃঙ্খলাপরায়ণ। নতুন যাঁরা আসছেন, তাঁরা এটা মনে রাখবেন। ছোট্ট ঘটনা ঘটিয়ে এত বড় সভা নষ্ট করার চক্রান্ত হল। কিন্তু মানুষ তা করতে দেননি। আমি আজ এখানে অতিথি। এখানকার আসল নায়ক শুভেন্দু দা।’ এদিন দিলীপবাবু আরও বলেন, ‘বাংলায় উগ্রপন্থীরা ধরা পড়ছে। মা বোনেদের বাঁচাতে বিজেপি একমাত্র ভরসা।’
এতকিছুর পরও এদিন নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মীদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মত। চারিদিকে ছেয়েছিল শুধুই গেরুয়া পতাকা। যে নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে প্রতীক করে সরকারে এসেছিল সেই তৃণমূলের জোড়াফুল চিহ্নের পতাকা যেন কোথাও ফিকে হয়ে গেল বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। অন্যদিকে, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের শহিদ পরিবারকেও এদিন বিজেপি তাদের মঞ্চে বসিয়েছে, যা খুবই তাত্পর্যপূর্ণ বলেই ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের।