শহিদ মিনার চত্বরে ছাত্র-যুব সমাবেশ তৃণমূলের। সেখানে প্রধান বক্তা অভিষেক। যেখানে সভা হচ্ছে, সেখান থেকে একটু দূরেই মঞ্চ বেঁধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন বর্ধিত হারে বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবি করা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। শহিদ মিনারের মঞ্চ থেকে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডের প্রশ্ন, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না?

এদিন মোদী সরকারকে আক্রমণ করে অভিষেকের দাবি, “২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেভাবে আর্থিকভাবে বাংলাকে বঞ্চিত করেছিল কেন্দ্র, তারপরও যাবতীয় প্রকল্প চালিয়ে গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।” বারবার বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ”তৃণমূল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সাসপেন্ড করতে পারে। ক্ষমতা থাকলে হিমন্ত বিশ্বশর্মা, শুভেন্দু অধিকারী, বিশ্বজিৎ কুণ্ডুকে সাসপেন্ড করে দেখাক। শুধু ভাইপো এই করেছে সেই করেছে তিন বছর হয়ে গিয়েছে এখনও নাম নিতে ভয় পায়। তৃণমূলকে দুর্বল করতেই এজেন্সির ব্যবহার করা হচ্ছে।
এদিন রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিষেক বলেন, ”আমার পেছনে ইডি সিবিআই লাগাতে হবে না। দুর্নীতিতে আমার যোগসাজশ থাকলে প্রমাণ করুক আমি নিজেই মৃত্যুবরণ করব।” কার্যত হুমকির সুরে এদিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “সিবিআই করুন। কিন্তু মানুষের কাজের জন্য টাকা দিন। আমি জেদি ছেলে। একা হলেও আমি দিল্লিতে যাব। দিল্লি অচল করে ছাড়ব।”
এদিকে কেন্দ্রের সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক বঞ্চনার প্রতিবাদে বুধবার দুপুর বারোটা থেকে রেড রোডে আম্বদকর মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধরনা মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপনারা জানেন আমার দুটো দায়িত্ব আছে। একটা হচ্ছে আমি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সুতরাং বাংলার মানুষের প্রতি অবিচার হলে আমার উপর একটা দায়বদ্ধতা থাকে মানুষের সেই দায়িত্ব পালন করার। দুই, হচ্ছে আমি অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান এবং এই সরকার অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের। তাই আজকের এই ধরনাটা আমরা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে না করে আমরা অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে করছি। তার কারণ আপনারা আমাদের দলের সিম্বলটা দেখতে পাচ্ছেন। সুতরাং আমি ডবল ডিউটি পালন করছি।” তৃণমূলের ধরনা মঞ্চ থেকে ‘ওয়াশিং মেশিন ভাজপা’ বলে স্লোগান ওঠে। এদিন একটি আস্ত ওয়াশিং মেশিন নিয়ে আসা হয় মঞ্চে। প্রতীকী প্রতিবাদে তৃণমূল দাবি করে, বিজেপিতে গেলেই মুছে যায় দুর্নীতির দাগ।

হাইকোর্টের নির্দেশে শর্তসাপেক্ষে সভা করার অনুমতি পেয়েছেন অভিষেক। স্বাভাবিকভাবেই শহিদ মিনারের সামনে পুলিশি তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। মাঝে কেবল একটা টিনের ব্যারিকেড। শহিদ মিনারে ডিএ-র দাবিতে অবস্থানরত সরকারি কর্মীদের মঞ্চের পাশেই তৃণমূলের ছাত্র-যুব সমাবেশ। পাশাপাশি দুই কর্মসূচি যাতে সংঘাতের পরিবেশ না তৈরি হয় সকাল থেকে কড়া নজরদারি ছিল পুলিশের।